পরীক্ষার কারণে এ বারের শিলিগুড়ি পুরভোটের গণনা কেন্দ্র বদল হতে চলেছে। আজ, শুক্রবার শিলিগুড়ি সার্কিট হাউসে সর্বদলীয় বৈঠকে এ বিষয়ে জানিয়ে দেবে প্রশাসন।
লোকসভা থেকে পুরসভা যে কোনও ভোটেই শিলিগুড়ি কলেজেই গণনা কেন্দ্র তৈরি হয়ে এসেছে। ইভিএম সংগ্রহ, জমা দেওয়ার কেন্দ্র (ডিসিআরসি) থেকে স্ট্রং রুম সবই কলেজেই হয়েছে। এ বছর উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা চলতে থাকায় জেলা প্রশাসন শিলিগুড়ি কলেজ চত্বর ব্যবহার করতে পারবে না। সে কারণেই গণনা কেন্দ্র শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। স্কুলেই ডিসিআরসি কেন্দ্র এবং স্ট্রংরুম তৈরি করা হবে বলে আপাতত স্থির হয়েছে। যদিও, বয়েজ স্কুলের সামনে রাস্তা অপ্রশস্ত বলে আপত্তি উঠেছে। আগামী এপ্রিল মাসে ওই স্কুলেরও নিজস্ব পরীক্ষা চলার কথা রয়েছে, সে কারণে স্টেশন ফিডার রোডের অন্য একটি স্কুলকেও গণনা কেন্দ্রের জন্য বেছে নেওয়া হতে পারে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
শিলিগুড়ির মহকুমা শাসক তথা পুরভোটের রির্টানিং অফিসার দ্বীপাপ প্রিয়া বলেন, “শিলিগুড়ি কলেজে গণনা কেন্দ্র তৈরি হওয়া সম্ভব নয়। সে কারণেই বিকল্প কেন্দ্রের খোঁজ করা হয়েছিল। সেই মতো একটি স্কুলকে বেছে নেওয়া হয়েছে। আগামী কাল সর্বদল বৈঠকে তা জানানো হবে।”
এ দিকে, বৃহস্পতিবারই শিলিগুড়িতে পর্যবেক্ষকরা এসে পৌঁছেছেন বলে জানা গিয়েছে। আজ, শুক্রবার সার্কিট হাউসে প্রশাসনের যে আধিকারিকরা পুরভোটের প্রক্রিয়ায় যুক্ত রয়েছেন তাঁদের নিয়ে পর্যবেক্ষকরা বৈঠক করবেন। বৈঠকে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের অফিসারদেরও উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক বৈঠকের পরে সার্কিট হাউসেই সর্বদল বৈঠকে পর্যপেক্ষকরাও উপস্থিত থাকবেন। পুরসভার ৪৭টি ওয়ার্ডের জন্য দু’জন পর্যবেক্ষক দায়িত্বে রয়েছে। দু’জনেই ডব্লুবিসিএস (এক্সিকিউটিভ) অফিসার। ১ থেকে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য অনিমেষ ভট্টাচার্য এবং গোমা লেম্বু শেরিং ২৬ থেকে ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবেন। ওয়ার্ড ভিত্তিক দুই পর্যবেক্ষক ছাড়াও সামগ্রিক ভাবে পুরভোটের তদারকির জন্য একজন বিশেষ পর্যবেক্ষকও শিলিগুড়ি পৌঁছেছেন। রাজ্য নির্বাচন কমিশন শিলিগুড়ির বিশেষ পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দিয়েছেন অবনীন্দ্র সিংহকে। ২০০২ সালের ব্যাচের এই আইএএস অফিসারকেও বিভিন্ন দলের প্রার্থী, এজেন্টরা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন। মনোনয়ন পত্র স্ক্রুটিনির পরে, প্রত্যাহার শেষ হওয়ার পরে পর্যবেক্ষকরা আগামী ৩০ মার্চ ফিরে যাবেন বলে জানা গিয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য ফের আগামী ২১ এপ্রিল পর্যবেক্ষকরা শিলিগুড়িতে আসবেন।
এ দিকে, বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত গণনাকেন্দ্র এবং ডিসিআরসি তৈরির স্থান নিয়ে প্রশাসনের মধ্যে সংশয় রয়েছে। বরাবর গণনাকেন্দ্র থাকা শিলিগুড়ি কলেজ যে পাওয়া যাবে না তা গত সপ্তাহেই জানতে পেরেছে প্রশাসন। আগামী ২৮ মার্চ ণেতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কলেজে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। মাসখানেক ধরে পরীক্ষা চলবে। তার পরেই বয়েজ স্কুলকে গণনা কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করে প্রশাসন। যদিও, স্কুল লাগোয়া রাস্তা অপ্রশস্ত হওয়ায় ভোটের আগে ও পরে ইভিএম নেওয়া, জমা দেওয়ার জন্য প্রচুর সংখ্যক গাড়ি যাতায়াত করবে। অত গাড়ি ঢোকা সম্ভব কি না তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। সেই সঙ্গে গণনার দিন বিভিন্ন দলের কর্মী সমর্থকদের ঘিঞ্জি এলাকায় দাঁড়াতে হবে। তাতে অপ্রীতিকর ঘটনারও আশঙ্কা করছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের কয়েকজন। বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন দাস বলেন, “সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। জানতে পারলে সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।”