Didir Doot

দিদির দূতের প্রবেশ নিষেধ, যদি না... মালদহের গ্রামে পড়ল পোস্টার, তৃণমূল বলল, শুনতেই তো যাচ্ছি!

রাস্তা যত দিন পাকা না হচ্ছে তত দিন এলাকায় ‘দিদির দূত’ বা অন্য কোনও নেতা প্রবেশ করতে পারবেন না। পুরাতন মালদহের পর মঙ্গলবার এমন পোস্টার দেখা গেল মালদহেরই ইংরেজবাজারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইংরেজবাজার শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:১০
Share:

আবার পোস্টার মালদহের গ্রামে। — নিজস্ব চিত্র।

রাস্তা যত দিন পাকা না হচ্ছে তত দিন এলাকায় ‘দিদির দূত’ বা অন্য কোনও নেতা প্রবেশ করতে পারবেন না। পুরাতন মালদহের পর মঙ্গলবার এমন পোস্টার দেখা গেল মালদহেরই ইংরেজবাজারে। এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধেছে বিজেপি। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, অভিযোগ শুনতেই যাওয়া হচ্ছে গ্রামে। গত কয়েক দিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে জল, রাস্তা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি ইত্যাদি নানা প্রকল্প নিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়তে দেখা গিয়েছে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা ‘দিদির দূত’দের। এই আবহেই সোমবার পুরাতন মালদহের মঙ্গলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁসিপাড়া গ্রামের একাধিক বাড়ির দেওয়ালে দেখা যায় লেখা রয়েছে— ‘নেতামন্ত্রীর এই পাড়ায় ঢোকা নিষেধ।’ তার পর দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার সেই দৃশ্য দেখা গিয়েছে ইংরেজবাজার ব্লকের কাজিগ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালপুর, কৃষ্ণপুর এবং ৫২ বিঘা এই ৩টি গ্রামেও।

Advertisement

ওই গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, বাগবাড়ি খোয়ার মোড় থেকে ৫২ বিঘা পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা পাকা করতে হবে। পোস্টারে এ-ও লেখা, যত দিন রাস্তা পাকা না হচ্ছে তত দিন সেখানে দিদির দূত বা অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা প্রবেশ করতে পারবেন না। পোস্টার দেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়ে দিলীপ পাল নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘আমরা রাস্তার সমস্যা নিয়ে ভুগছি। বিভিন্ন দফতরে জানিয়েও এই সমস্যার সমাধান হয়নি। এই জন্যই পোস্টার দিয়েছি আমরা। রাস্তা না হলে আমরা গ্রামে কাউকে ঢুকতে দেব না। প্রয়োজনে আমরা ভোট বয়কটও করতে পারি।’’

একই কথা বলছেন ৫২ বিঘা গ্রামের বাসিন্দা চন্দনা মণ্ডলও। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে প্রশাসনকে বলে বলেও আমাদের এখানকার রাস্তা হচ্ছে না। আমাদের অসুবিধা হচ্ছে। তাই নেতামন্ত্রী এবং দিদির দূত কাউকেই আমরা এলাকায় ঢুকতে দেব না। তাই আমরা পোস্টার দিয়েছি।’’

Advertisement

ইংরেজবাজার ব্লকের কাজিগ্রাম পঞ্চায়েতটি তৃণমূলের দখলে। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলকেই বিঁধেছে বিজেপি। বিজেপির দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, ‘‘গত ৫ বছর ধরে দিদির ভূতদের এলাকাবাসী দেখেছেন। গ্রামে ঢুকলেই লুটেপুটে খেয়েছেন তাঁরা। তাই আতঙ্কিত এলাকাবাসী। ফলে এমন পোস্টার পড়েছে।’’

গ্রামবাসীদের অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলের মালদহ জেলার মুখপাত্র শুভময় বসু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের ১৫টি সামাজিক প্রকল্প বাংলার সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কিছু না পাওয়ার অভিযোগ থাকবেই। এটা স্বাভাবিক। তা সম্পূর্ণ করতেই দিদির দূতরা গ্রামে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছেন। কিন্তু বিরোধীদের লক্ষ্যই হচ্ছে তাতে বাধা সৃষ্টি করা।’’

এ নিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘দিদির দূতরা কত গ্রামে যাচ্ছেন! যতগুলি জায়গায় যাচ্ছেন তার তুলনায় ক্ষোভের দৃষ্টান্ত কত কম! সেটা কি দেখছেন? যে জায়গাগুলিতে মানুষ ভাল বলছেন, প্রশংসা করছেন, পুষ্পবৃষ্টি করছেন সেগুলির কথা তো কেউ বলছেন না? রাস্তা হয়নি, পরিষেবা পাননি— এগুলি তো মানুষ বলবেনই। সেগুলি শুনতেই তো আমাদের যাওয়া।’’

গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় ‘দিদির দূত’দের নানা ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন অনেকে। সিপিএম এবং বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলি এই ক্ষোভকে শাসকদলের বিরুদ্ধে ‘অনাস্থার প্রতিফলন’ বলে দাবি করে ময়দানে নেমেছে। এই আবহে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, “রাস্তা দিয়ে গেলে মানুষ কিছু বলবে না, তা নয়। ক্ষোভ থাকতেই পারে। মানুষের কিছু জানানোকে বিক্ষোভ বলে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন