অবরোধ এসইউসি-র। —নিজস্ব চিত্র।
আলুর সহায়ক মূল্য ১০ টাকা ঘোষণার দাবিতে প্রায় আধ ঘণ্টা ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন এসইউসি কর্মী-সমর্থকরা।
শনিবার ময়নাগুড়ি রোড এলাকায় ওই অবরোধের জেরে রাস্তার দু’পাশে দূরপাল্লার পণ্য বোঝাই ট্রাক ও বাসের লাইন পড়ে যায়। যানজটে নাকাল হতে হয় নিত্যযাত্রীদের। নাস্তানাবুদ পথচারীরা অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, “আলুর সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির দাবি নিয়ে প্রশাসনের কর্তাদের কাছে দরবার না করে কেন জাতীয় সড়ক অবরোধ করে সাধারণ মানুষকে বিড়ম্বনায় ফেলা হচ্ছে।”
যদিও নিত্যযাত্রী ও পথচারীদের প্রশ্নের উত্তর প্রশাসনের কর্তা অথবা রাজনৈতিক নেতাদের কাছে মেলেনি। উল্টে, আলু নিয়ে কথায় কথায় জাতীয় সড়ক অবরোধ করে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করার ঘটনা নিয়ে প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ পথচারীদের মতো প্রশ্ন তুলেছেন। ময়নাগুড়ির বিডিও শ্রেয়সী ঘোষ বলেন, “জাতীয় সড়ক অবরোধের আগে ব্লক প্রশাসন অথবা কৃষি আধিকারিকদের কিছুই জানানো হয়নি। দাবি অথবা ক্ষোভ থাকতে পারে, কিন্তু সেটা নিয়ে আলোচনায় না বসে কেন জাতীয় সড়ক অবরোধ করে সাধারণ যাত্রীদের বিপাকে ফেলা হচ্ছে সেটা বুঝতে পারছি না।”
এ দিন অবরোধকারীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন, নাকাল যাত্রী মহলে সেই প্রশ্ন উঠেছে। কেন বিপর্যস্ত দশা দেখেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হল না? বিডিও বলেন, “শনিবার অবরোধ তুলে দেওয়া হলেও উত্তেজনা এড়াতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে জাতীয় সড়ক অবরোধ ঠেকাতে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয় নিয়ে সোমবার আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এ দিন পৌনে ১২টা নাগাদ এসইউসি সমর্থকেরা আচমকা ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে ব্যস্ততম রাস্তায় বাস-ট্রাকের লাইন পড়ে যায়। হাঁসফাঁস করা অবস্থা হয় পথচারীদের। যানজটে দু’পা এগোন সম্ভব হয়নি, জানান তাঁরা। কিন্তু ওই দুর্ভোগ দেখার কেউ ছিল না। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে অবরোধ তুলে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
এ দিন আন্দোলনকারীরা আলুর সহায়ক মূল্য দশ টাকা ঘোষণার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। সেই সঙ্গে আত্মঘাতী চাষির পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ, আলু চাষের জন্য দেওয়া ঋণ মকুবের দাবি জানানো হয়। এসইউসির ময়নাগুড়ি লোকাল কমিটির সম্পাদক সুরেশ রায় বলেন, “আলু চাষিদের প্রাণ বাঁচাতে রাজ্য সরকারকে দশ টাকা সহায়ক মূল্য ঘোষণা করতে হবে। প্রচুর চাষি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছেন। তাঁদের ঋণ মকুবের ব্যবস্থা নিতে হবে।” কিন্তু প্রশাসনের কর্তাদের দাবির কথা না জানিয়ে কেন জাতীয় সড়ক অবরোধ? এসইউসিআই-র জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সদস্য অমল রায় বলেন, “এর আগে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের দাবির কথা জানানো হয়েছে। কোনও লাভ হয়নি। তাই নিরুপায় হয়ে জাতীয় সড়ক আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।”