Pradhan Mantri Aawas Yojna

আবাস তালিকায় নাম বাদ, আটকে রাখা হল অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে

সকাল ১১টা থেকে ঘণ্টা দুয়েক অবরোধে জেরে  ভুগতে হয় সাধারণ মানুষকে। ওই রাস্তা দিয়ে ভুটানের গাড়িও চলে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কুমারগ্রাম থানার অন্তর্গত বারবিশা ফাঁড়ির পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:১৬
Share:

আটকে রয়েছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। নিজস্ব চিত্র।

আবাস যোজনার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ার জেরে, এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মধ্যেই তালাবন্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠল। আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের উত্তর পাটকাপাড়ার এই ঘটনায় শনিবার দুপুরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। খবর পেয়ে আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ গিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে উদ্ধার করে।

Advertisement

রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার সঙ্গে আলিপুরদুয়ারেও প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনার প্রথম দফার সমীক্ষার কাজের অন্যতম দায়িত্ব ছিল আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের উপরে। সেই মতো উত্তর পাটকাপাড়ার বাসিন্দা নবীনা রায়েরও একই দায়িত্ব ছিল। তিনি জানান, সমীক্ষার কাজে নামার আগে, প্রশাসনের তরফে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। সে অনুযায়ী, তথ্য যাচাই করে তিনি রিপোর্ট জমা দেন। ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর অভিযোগ, “আমার জমা করা রিপোর্টের ভিত্তিতে আদৌ কার নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ে বা কার নাম তালিকায় থেকে গিয়েছে, তার কিছুই আমি জানি না। কিন্তু শনিবার দুপুরে আচমকাই এলাকার একদল বাসিন্দা আমার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চলে আসেন। আমি নাকি তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদি দিয়েছি জানিয়ে আমাকে কেন্দ্রের ভিতরেই একটি ঘরে প্রায় দেড় ঘণ্টা তালা বন্ধ করে রাখেন।”

নবীনা বলেন, “সরকারি কাজ করতেই হবে। তা ছাড়া, দীর্ঘদিন ধরেই আমি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী হিসাবেও কাজ করছি। ফলে, এলাকায় সকলের সঙ্গেই আমার ভাল সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু, তাদেরই কেউ কেউ এসে এ ভাবে আটকে রাখবেন, ভাবিনি!’’

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের বিডিও সঞ্জয় প্রধানের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এসএমএসেরও উত্তর দেননি তিনি। তবে জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “খবর পেয়েই আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে উদ্ধার করে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। আবাস যোজনার ঘর নিয়ে এলাকার কারও কোনও অভিযোগ থাকলে, তাদের ব্লক প্রশাসনের কাছে তা জানাতে বলা হয়।”

এ দিকে, যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও আবাস তালিকায় নাম না থাকার অভিযোগ তুলে শনিবার কুমারগ্রাম ব্লকের ভল্কা বারবিশা ১ পঞ্চায়েতের সামনে কুমারগ্রাম-জোড়াই রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, এলাকার অনেক স্বচ্ছল পরিবারের নাম ‘আবাস প্লাস’ তালিকায় রয়েছে, অথচ যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের নাম নেই।

সকাল ১১টা থেকে ঘণ্টা দুয়েক অবরোধে জেরে ভুগতে হয় সাধারণ মানুষকে। ওই রাস্তা দিয়ে ভুটানের গাড়িও চলে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কুমারগ্রাম থানার অন্তর্গত বারবিশা ফাঁড়ির পুলিশ। পুলিশ পৌঁছে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে। যদিও বিডিও না আসা পর্যন্ত অবরোধ জারি রাখার দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা। অবশেষে, কুমারগ্রাম থানার শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকদের পাশাপাশি পৌঁছন বিডিও মিহির কর্মকার। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনার পরে, বিডিও বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।

এক আন্দোলনকারী সবিতা সূত্রধর বলেন, ‘‘অনেক স্বচ্ছল পরিবারের নাম আছে আবাস তালিকায়। যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও এলাকার অনেকের নাম নেই। আমরা চাই, ঘর দেওয়া হোক।’’

বিডিও বলেন, ‘‘আমরা ওঁদের থেকে দরখাস্ত নিয়েছি। বিষয়টি উপর মহলে জানানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন