‘চুরানা পড়েগা দিল’, দাওয়াই পিকে-র

দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ও মন্তব্য করতে চাননি। দলের কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী বলেন, “আরও বেশি জনসংযোগ বাড়াতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে বলা হয়েছে।” দলের অন্য এক নেতার দাবি, পিকে ওই বৈঠকে হিন্দিতে বক্তব্য রাখেন।

Advertisement

অরিন্দম সাহা 

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৩৭
Share:

প্রশান্ত কিশোর।

আর গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়, সবাই মিলে মন দিয়ে কাজ করে মানুষের মন জেতার করুন— এমনই পরামর্শ দেওয়া হল কোচবিহারের তৃণমূল নেতাদের। শনিবার কলকাতায় ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে সামিল জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। ওই বৈঠকে দলের দুই শীর্ষ নেতা সুব্রত বক্সী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রাও উপস্থিত ছিলেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে প্রায় আধ ঘণ্টা বক্তব্য রাখেন পিকে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দলের ক্ষতি হয় জানিয়ে মন দিয়ে কাজ করে মানুষের মন জেতার বার্তা দিয়েছেন তিনি। ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে সামিল নেতাদের আরও অন্তত ১০টি গ্রামে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রাও বেঁধে দেওয়া হয়। জেলার প্রতিটি ব্লকে স্থানীয়ভাবে প্রভাব রয়েছে এমন অন্তত ১০ জন করে রাজবংশী, তফসিলি সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের নামের তালিকা চাওয়া হয়েছে। দলের এক নেতার কথায়, সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে মনোভাব বুঝে নিতেই চাইছে টিম পিকে। তার থেকেই জনমতের চিত্র উঠে আসবে।

Advertisement

তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ অবশ্য ওই বৈঠকের ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ। বিনয় বলেন, “দলের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করব না।” দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ও মন্তব্য করতে চাননি। দলের কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী বলেন, “আরও বেশি জনসংযোগ বাড়াতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে বলা হয়েছে।” দলের অন্য এক নেতার দাবি, পিকে ওই বৈঠকে হিন্দিতে বক্তব্য রাখেন। দলের নেতাদের মনোবল বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দলের ক্ষতি হয়, সে কথা জানিয়ে আগের নির্বাচনগুলিতে জেতার কথা তুলে ধরেই উদ্দীপ্ত করা হয় দলের নেতাদের। এক নেতার দাবি, পিকে বলেন, আপনাদের ভিতরে শক্তি আছে। আপনাদের কাজ করতে হবে। এভাবেই ‘দিল চুরানা পড়েগা’।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারের বিধায়ক, প্রাক্তন সাংসদ, জেলা পরিষদ সদস্য-সহ শহর ও গ্রামাঞ্চলের মোট ৪৭ জন নেতা ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির তালিকায় রয়েছেন। তাঁদের আগের কর্মসূচির ব্যাপারেও বৈঠকে পর্যালোচনা হয়। একাধিক কর্মসূচি ঠিকমতো হয়নি বলেও বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়। কেন ঠিক ভাবে তা করা যায়নি, সেই ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। লোকসভায় কেন ভোট কমেছে, তা নিয়েও পর্যালোচনা করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হচ্ছে কিনা, সে সব নিয়ে নজর রাখার বার্তা দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতার কথায়, সমস্ত এলাকার খোঁজখবর টিম পিকে রাখছে বলেও বৈঠকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে সকলকে।

Advertisement

গত লোকসভা ভোটে কোচবিহার আসনটি তৃণমূলের হাতছাড়া হয়। বিজেপি ওই আসনে জেতে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও ওই পরাজয়ের অন্যতম কারণ বলে দলের একাংশের দাবি। দলের জেলা নেতৃত্ব অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ মানতে চাননি। সব মিলিয়েই কোচবিহারে আগামী বিধানসভা ভোটের লক্ষ্যে নতুন করে নেতাদের চাঙ্গা করে এগোতে চাইছে দল। ওই কাজে ‘টিম পিকে’র পরামর্শ মেনে জেলায় নানা উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন