পরীক্ষা: বিভিন্ন জেলায় পাঠানোর আগে প্রতিষেধক-ভর্তি বাক্সগুলি দেখে নেওয়ার কাজ চলছে। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে। ছবি: বিনোদ দাস।
কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেল। বুধবার গভীর রাতে প্রতিষেধকের গাড়ি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পৌঁছয়। কড়া নিরাপত্তায় বৃহস্পতিবার গাড়ি থেকে প্রতিষেধকের বাক্স নামানো হয় স্টোরে। দার্জিলিং ছাড়াও কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং এবং আলিপুরদুয়ারের জন্য প্রতিষেধক এখান থেকে নিয়ে যায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন। রাত পোহালেই করোনার প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হবে সর্বত্র।
সেই মতো সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে ‘কোউইন অ্যাপ’ না খোলার জন্য নাম নথিভুক্ত করাতে এদিন পর্যন্ত সমস্যা হচ্ছে দার্জিলিং, কালিম্পঙের মতো জেলাগুলোয়। কেননা, অ্যাপে ১০০ জনের নাম নথিভুক্ত হলেই সেইমতো যাঁরা প্রতিষেধক নেবেন তাঁদের মোবাইলে মেসেজ যাবে। তা না হওয়ায় কম্পিউটারে তালিকা তৈরি করে ‘প্রিন্ট’ করে নথি রাখা হচ্ছে। অ্যাপে সমস্যা হলে যাতে কাজে বাধা না হয়। সে ক্ষেত্রে নথি দেখে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিষেধক নিতে ডাকা হবে বলেই স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রতিদিন ১০০ জনকে দেওয়া হবে। অ্যাপে সমস্যা নিয়ে দার্জিলিঙের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘ইন্টারনেটে সমস্যার জন্য আমরা বিকল্প নেটের লাইন রাখছি। সমস্যা নিয়ে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলছি।’’
প্রথমে ঠিক ছিল দার্জিলিং জেলায় সাতটি কেন্দ্রে ১২টি জায়গায় প্রতিষেধক দেওয়া হবে। এদিন স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলার পর নকশালবাড়ি এবং ফাঁসিদেওয়া ব্লক হাপাতালের কেন্দ্র দুটি প্রতিষেধক দেওয়ার সূচি বাতিল করা হয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ৫ টি সাইট বা জায়গা এবং শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে দুটি জায়গায়র বদলে পাঁচটি কেন্দ্রে একটি করে জায়গাতেই প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলা হয়। এবং সব জায়গাতেই ওয়েবকাস্টিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
প্রতিষেধক কর্মসূচির দায়িত্বে থাকা উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক(৩) সংযুক্তা লিউ বলেন, ‘‘সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। শনিবার সকাল ৮টা থেকেই সমস্ত কেন্দ্রে প্রতিষেধকের কাজে যুক্ত আধিকারিক, স্বাস্থ্যকর্মীরা পৌঁছে যাবেন। ৯টা থেকে সমস্ত কেন্দ্রে প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়ে যাবে। সেইমতো সমস্ত ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ দার্জিলিং জেলার জন্য ১৮০০০ ডোজ এসেছে। প্রথম দফায় যাঁরা নেবেন এখান থেকেই তাঁদের জন্য দুটো করে ডোজ রাখা হবে।
শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে সুপারের দফতরের কাছে প্যান্ডেল বেঁধে ক্যাম্প করে সেখানে প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। প্রথম দিন কর্মসূচির সূচনাপর্ব বেলা ১টার সময় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভিডিয়ো কনফারেন্সে মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন। প্রতিষেধক নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও উৎসাহ তৈরি হয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রধান গৌতম ধর বলেন, ‘‘সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নতুন প্রতিষেধক, ট্রায়াল হয়েছে। তবে ‘কমপ্লিট ট্রায়াল’ হয়নি। সরকারের তরফে বলা হয়েছে এটা নিরাপদ। এর কার্যকারিতা ৮০ শতাংশেরও বেশি বলে দাবি করা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, ‘টাইম টেস্টিং’ হয়নি। যেমন আজকে প্রতিষেধক দেওয়ার তিন বছর পর কী হচ্ছে। এই ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়নি।