ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদের জন্য গয়েশবাড়ির সফিকুল ইসলামকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে। তবে মাদকের কারবারিদের একাংশের হাতও থাকতে পারে বলে পুলিশের সন্দেহ। কারণ, সফিকুলকে যে খুন করে গণপিটুনিতে মারা গিয়েছে, সেই তৌফিক শেখ মাদকাসক্ত ছিলেন। এলাকায় মাদকের কারবারিদের সঙ্গে যোগসাজস ছিল বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ জানায়, সফিকুলকে খুনের খবর চাউর হতেই উত্তেজিত জনতার রোষের মুখে পড়ে গণপিটুনি খায় তৌফিক এবং সেও পরে মারা যায়। পুলিশ দু’তরফের অভিযোগ পেয়ে দু’টি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। শুক্রবার মৃতদেহ দু’টির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ কালিয়াচকের গয়েশবাড়ি ও চাষপাড়ার মাঝামাঝি এলাকায় থাকা একটি বেসরকারি মাদ্রাসার কাছে খুন হন পেশায় রেশম ব্যবসায়ী গয়েশবাড়ির বাসিন্দা সফিকুল ইসলাম। অভিযোগ, চাষপাড়ার ২৪ বছরের যুবক তৌফিক শেখ তাঁকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। প্রকাশ্য দিবালোকে কেন সফিকুলকে খুন করা হল, তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠে আসে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে, তৌফিক তাঁর স্ত্রীকে মাঝেমধ্যেই মারধর করতেন। তৌফিকের স্ত্রী তাঁর সঙ্গে থাকতও না। কয়েকমাস আগে স্ত্রীকে মারধর করা নিয়ে তৌফিককে বারণ করেছিল প্রতিবেশী সফিকুল। ফলে সেই আক্রোশ তৌফিকের ছিলই।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নটা নাগাদ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃতদেহ কবর দিয়ে ফিরে বাড়ির কাছেই রাস্তার পাশে নিজের বাইক পরিষ্কার করছিলেন সফিকুল। সে সময় এক নবম শ্রেণির ছাত্রী সহ তিন জন ছাত্রী প্রাইভেট টিউশন পড়ে সেদিক দিয়ে বাড়ি ফিরছিল। অভিযোগ, সে সময় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকা তৌফিক ওই নবম শ্রেণির ছাত্রীটিকে কটূক্তি করে। ঘটনাস্থলে থাকা সফিকুল তার প্রতিবাদ করে। এ নিয়ে সফিকুলের সঙ্গে তৌফিকের প্রথমে বচসাও হয়। কিছুক্ষণ পরে তৌফিক সেখান থেকে চলে যায় ও বেলা ১০ টা নাগাদ ফের ফিরে এসে সফিকুলের পায়ে সে হাঁসুয়া দিয়ে কোপ মারেন বলে অভিযোগ। জনতা তৌফিককে ধরে ফেলে ও গণপিটুনি দেয়। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিত্সক মৃত বলে ঘোষণা করে।