Hearse van

ভাড়ার তালিকা নেই, অ্যাম্বুল্যান্স তাই দাম হাঁকায়

কোচবিহার পুরসভার একটি শববাহী ভ্যান রয়েছে। ওই ভ্যান সব সময় মেলে না। তাই বেশিরভাগই অ্যাম্বুল্যান্সের উপরে নির্ভরশীল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:০৮
Share:

ক্রান্তির সেই বাড়িতে। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

হাতে গোনা শববাহী গাড়ি। অভিযোগ, সরকারি নম্বরে ফোন করে লাভ হয় না অধিকাংশ সময়েই। তাই বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সই ভরসা সাধারণ মানুষের। অভিযোগ, সেই অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ন্ত্রণে নেই কোনও ব্যবস্থা। নেই ভাড়ার তালিকা। তাই সুযোগ বুঝে আকাশছোঁয়া ভাড়া হাঁকিয়ে বসেন অনেকেই। তা নিয়েই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে। কেন্দ্রীয় ভাবে কেন অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়ার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে না, প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

Advertisement

কোচবিহারের জয়হিন্দ বাহিনীর জেলা সভাপতি প্রবাল গোস্বামী জানান, বছরখানেক আগে, কোচবিহার শহর থেকে দেওয়ানহাটে একটি মৃতদেহ নিয়ে যেতে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন এক অ্যাম্বুল্যান্স চালক। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ হন মৃতের পরিজনেরা। কোচবিহার থেকে দেওয়ানহাটের দূরত্ব পনেরো থেকে কুড়ি কিলোমিটার। সেখানে ওই টাকা কখনও ভাড়া হয়নি। কোচবিহার থেকে শিলিগুড়ি রোগী নিতে বড় অ্যাম্বুল্যান্সের ওই ভাড়া রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সকলে যে এক, তা নয়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তাই ভাড়ার একটি তালিকা থাকা প্রয়োজন।’’

কোচবিহার পুরসভার একটি শববাহী ভ্যান রয়েছে। ওই ভ্যান সব সময় মেলে না। তাই বেশিরভাগই অ্যাম্বুল্যান্সের উপরে নির্ভরশীল। আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত অ্যাম্বুল্যান্স ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের কোচবিহার জেলা সভাপতি রাজু ঠাকুর বলেন, ‘‘আমরা প্রত্যেকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ভাড়া রাখি।’’

Advertisement

কোচবিহার জেলায় শতাধিক অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চালু রয়েছে। তার মধ্যে ১০২ ডায়াল ও নিশ্চয়যানের পরিষেবা রয়েছে। সরকারি ওই পরিষেবায় পয়সা প্রয়োজন হয় না। কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবায় যাতে খামতি না থাকে, সে দিকে সব সময় নজর রাখা হয়।’’

অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিয়ে আলিপুরদুয়ারে সমস্যা দীর্ঘদিনের বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। অভিযোগ, সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের সংখ্যা কম থাকায় বাসিন্দাদের বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের উপরে বেশি নির্ভর করতে হয়। আরও অভিযোগ, রাতে ভাড়ার জন্য নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি টাকা দিতে হয়। মৃতদেহ বহনের ক্ষেত্রেও দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়া হয় অনেক ক্ষেত্রে। তবে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় আত্মহত্যার ঘটনায় ভ্যানের ভাড়ার ক্ষেত্রে। সরকারি হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ আনতেও সমস্যায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।

আলিপুরদুয়ারে জেলায় তিনটি সরকারি, ১০২ ডায়ালের ১৩টি, নিশ্চয়যান ৩০টি, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রায় ১৫টি ও বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে প্রায় ৫০টি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রোগী ও তাঁদের পরিজনদের অসুবিধার জন্য প্রত্যেকটি হাসপাতালে রোগী সহায়তা কেন্দ্র খোলা রয়েছে। সেখানে যোগাযোগ করলে মানুষকে সমস্যায় পড়তে হবে না। তবে সাধারণ মানুষের জন্য অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবায় আমরা সব সময় নজর রাখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন