নির্মাণে ত্রুটি ধরা পড়ার পরে দু’বছর গড়ালেও ‘শিলিগুড়ি গেট’-এর কাজ ফের চালু করতে গড়িমসি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিলিগুড়ি বাসিন্দাদের ওই অভিযোগ পৌঁচেছে নবান্নেও। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসন্ন শিলিগুড়ি সফরে তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে আঁচ করে তড়িঘড়ি আসরে নেমেছেন খোদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
মন্ত্রী বলেন, ‘‘নির্মাণ নকশায় গলদ থাকায় এমনিতেই অনেক দেরি হয়েছে। এখন কোনও গড়িমসি বরদাস্ত হবে না। নভেম্বরের শেষেই ফের শিলিগুড়ি গেটের কাজ চালু হবে। যে দিন শুরু হবে সে দিন আমি সকাল থেকে দিনভর ওখানে দাঁড়িয়ে থাকব।’’
সরকারি সূত্রের খবর, ২৩ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী নেতাজি জন্মজয়ন্তীর রাজ্য পর্যায়ের অনুষ্ঠান দার্জিলিঙে করান। তিনি নিজেও সেখানে যান। এবারও সেখানেই হওয়ার কথা। বাগডোগরা থেকে দার্জিলিং যাতায়াতের পথে মাল্লাগুড়ি দিয়ে গেলে ওই অসমাপ্ত গেট দেখে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, সে কথা মাথায় রেখেই রবিবাবু সরেজমিনে হাজির থেকে কাজ শুরু করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গৌতম দেব উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী থাকাকালীন শিলিগুড়ি শহরে ঢোকার মুখে মাল্লাগুড়ির পুলিশ কমিশনারেটের অফিসের সামনে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে ‘শিলিগুড়ি গেট’ তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। সেই মতো প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। কাজও শুরু হয়। ঠিক ছিল, দুধারের কংক্রিটের স্তম্ভের মাথায় বসানো হবে স্বচ্ছ ও শক্তপোক্ত কাচ। কিন্তু, স্তম্ভ তৈরির পরে কাচ বসানোর কাঠামো বানানোর সময়ে তা হেলে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। ২০১৫ সালের গোড়ায় খবর পেয়ে গৌতমবাবু বিপদের ঝুঁকি আঁচ করে নির্মাণ স্থগিত করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ চান। সেই পরামর্শ অনুযায়ী ‘রাইটস’কে দিয়ে নকশা পরীক্ষা করানো হয়। তাতেই বছর গড়িয়ে যায়।
গত বিধনাসভার ভোটের আগে ইঞ্জিনিয়ররা পরামর্শ দেন, কাচের বদলে হালকা ফাইবার গ্লাস ব্যবহার করতে হবে। ইতিমধ্যে বিধানসভা ভোট হয়। নতুন মন্ত্রিসভায় গৌতমবাবুর হাত থেকে রবীন্দ্রনাথবাবুর কাছে যায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। তার পরে দেড় বছর কেটে গেলেও ওই কাজ রবীন্দ্রনাথবাবু শুরু করাতে না পারায় প্রশাসনের অন্দরেও নানা প্রশ্ন দানা বাঁধছে।
সব ঠিক থাকলে মুখ্যমন্ত্রীর আজ, সোমবার শিলিগুড়িতে আসার কথা। ফেরার কথা ২৩ নভেম্বর। তার পরে চলতি মাসেই ‘শিলিগুড়ি গেট’ তৈরির কাজ ফের শুরু হয় কি না সেটাই দেখার।