লোকসভা নির্বাচনের আগে বাগান অধ্যুষিত এলাকার যত বেশি সম্ভব বাসিন্দাদের হাতে জাতিগত শংসাপত্র তুলে দিতে মরিয়া প্রশাসন। গত প্রায় ছ’মাসে আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন চা বাগান এলাকায় বসবাসকারী প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষের হাতে তফসিলি জনজাতির শংসাপত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। আরও প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ পেয়েছেন তফসিলি জাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির শংসাপত্র।
দল সূত্রে খবর, জাতিগত শংসাপত্র প্রদানে প্রশাসনের ভূমিকায় খুশি শাসক তৃণমূলের নেতারা৷ যদিও এরসঙ্গে রাজনীতি বা লোকসভা নির্বাচনের সম্পর্কে কথা মানতে নারাজ তাঁরা। তবে গত পঞ্চায়েত ভোটে চা-বলয়ের বিজেপির অপেক্ষাকৃত ভাল ফলের পরেই তৎপরতা দেখা যায় প্রশাসনে। প্রশাসন সূত্রের খবর, এরপরই চা বলয়ের বাসিন্দাদের আরও কাছে টানতে আপনার বাগানে প্রশাসন কর্মসূচি শুরু করে জেলা প্রশাসন। যে কর্মসূচির মূল লক্ষ্যই ছিল বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্তারা বাগানে ছুটে গিয়ে শিবির করে বাসিন্দাদের বিভিন্ন সরকারি সুবিধা প্রদান করা। সেই সঙ্গে প্রশাসনের কর্তাদের আরেকটি লক্ষ্য ছিল, জনজাতির মানুষদের মধ্যে শংসাপত্র প্রদান করা৷
প্রশাসন সূত্রেই খবর, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে চা বাগান এলাকায় অনেক মানুষেরই জাতিগত শংসাপত্র নেই৷ যার কারণ হিসাবে প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, এতদিন মূলত বিডিও অফিসে গিয়ে জাতিগত শংসাপত্রের জন্য আবেদন করতে হত। সেখানেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হত তাঁদের। কিন্তু দূরে বাস করা বাসিন্দাদের অনেকেই বিডিও অফিসে যেতেন না। তার ফলে তাদের শংসাপত্র তৈরিও হত না। শংসাপত্র না থাকায় তাঁরা সরকারি অনেক সুযোগ সুবিধেও পেতেন না।
এই অবস্থায় আপনার বাগানে প্রশাসন কর্মসূচিতে শিবির করে জাতিগত শংসাপত্র বিতরণ শুরু করেন প্রশাসনের কর্তারা। কাজ হয় তাতেই। আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক কৃষ্ণাভ ঘোষ জানান, “গত ছ’মাসে এই কর্মসূচিতে জেলায় দশ হাজারেরও বেশি বাসিন্দাকে জাতিগত শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। আরও বাসিন্দাদের শংসাপত্র প্রদানের প্রক্রিয়াও চলছে।” প্রশাসন সূত্রের খবর, আগে এক বছরে এর অর্ধেক মানুষেরও শংসাপত্র তৈরি হত না।
প্রশাসনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। দলের জেলা সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, ‘‘জাতিগত শংসাপত্র না থাকায় এতদিন অনেক মানুষ নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতেন। শংসাপত্র পেয়ে গেলে সেই সমস্যা দূর হবে।’’