নেশা-জুয়া ঠেকাতে পথে নেমে বিক্ষোভ

পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার দুপুরে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির ৩১-ডি জাতীয় সড়কের শিলিগুড়ির পিডব্লিউডি মোড়ে এই বিক্ষোভের পুরোভাগে ছিলেন অনেক মহিলাই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৬ ০২:৩৮
Share:

পিডব্লিউডি মোড়ে অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র

পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার দুপুরে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির ৩১-ডি জাতীয় সড়কের শিলিগুড়ির পিডব্লিউডি মোড়ে এই বিক্ষোভের পুরোভাগে ছিলেন অনেক মহিলাই।

Advertisement

বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, জাতীয় সড়ক লাগোয়া কলাবাগান এলাকায় নেশার ঠেকের দৌরাত্ম্য বেড়ে গিয়েছে। চা, মুদি থেকে ছোট ছোট দোকানে দিনভর মদ বিক্রি হচ্ছে। জুয়ার ঠেক বসছে। এতে এলাকার পরিবেশ খারাপ হচ্ছে। মঙ্গলবার একদল মহিলা নেশার ঠেকগুলির বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে নিগৃহীত হন। এ দিনই দুই মহিলাকে মারধর, ভয় দেখানো হয়। পুলিশকেও জানানো হয়। কিন্তু, এলাকা কার তা নিয়ে এনজেপি ফাঁড়ি এবং মাটিগাড়া থানার মধ্যে টানাপোড়েন চলে। এরে জেরেই তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে পথে নামেন বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

প্রায় ১৫ মিনিট জাতীয় সড়ক অবরোধের জেরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সেই সময় মেডিক্যাল কলেজে একটি অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার। তিনি গাড়ি থেকে নেমে বাসিন্দাদের বুঝিয়ে অবরোধ তোলেন। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘কলাবাগান এলাকাটি আমার নির্বাচনী ক্ষেত্রের মধ্যে পড়ে। সেখানে নেশা, জুয়ার ঠেকের রমরমা চলছে বলে বাসিন্দারা অভিযোগ জানিয়েছেন। পুলিশ ঠিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুষ্কৃতীদের দাপট বাড়ছে। পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি। নইলে বাসিন্দাদের নিয়ে আমাদেরও পথে নামতে হবে।’’

Advertisement

বিক্ষোভকারীরা জানান, এলাকাটি থেকে মাটিগাড়ার তানার অধীনে হলেও কমিশনারেটের এনজেপি ফাঁড়ির দূরত্ব মেরেকেটে ২ কিলোমিটার। আর মাটিগাড়া থানার দূরত্ব দ্বিগুণেরও বেশি। কিন্তু এনজেপি ফাঁড়িতে অভিযোগ জানালে তারা ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করে। গত দু’দিন ধরেই এমনটা হচ্ছে। মহিলারা মদের ঠেক ভেঙে, মদ উদ্ধার করে এনজেপির পুলিশ কর্মীদের হাতে তুলে দিয়েছে। তার পরেও দুষ্কৃতীদের ধরা হয়নি। পুলিশে অভিযোগ জানানোয় শেফালি বর্মন নামের এক মহিলাকে মারধর করে গলার চেন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ দিন সকালে কাজে যাওয়ার সময় আরতী বর্মন ও জয়ন্তী রায়কে হুমকি দিয়ে মারধর করে পালায় দুষ্কৃতীরা। অবরোধে সামিল হয়ে ওই মহিলারা বলেন, ‘‘পুলিশের একাংশের সঙ্গে বোঝাপড়া রয়েছে বলেও আমাদের শাসানো হচ্ছে।’’

মহিলাদের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারতীয় মানবাধিকার রক্ষা পরিষদ নামের স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও। তাদের সদস্যরাও অবরোধে সামিল হন। সংগঠনের সভাপতি পরিতোষ পাল, সদস্য ভাস্কর দাসদের ক্ষোভ, ‘‘এলাকা কার, এই নিয়ে পুলিশ অফিসারেরা দড়ি টানাটানি করছেন। আর এলাকায় নেশা, জুয়ার ঠেকে ভরে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে আমরাও পথে নেমেছি। বিধায়ক বিষয়টি দেখছেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’’ দিনের ব্যস্ত সময়ে কিছুক্ষণের অবরোধে বিরাট যানজট হয়। বাস, ট্রাক ও ছোট গাড়ির লাইন পড়ে যায়। শেষে মাটিগাড়া থানা থেকেও পুলিশ কর্মীরা আসেন। তাঁরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থার কথা বলেন। পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘নেশা, জুয়ার দৌরাত্ম্য বন্ধ করে সমাজবিরোধীদের ধরতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন