অন্তর্বাস ছুড়ে ক্ষোভ

নারী মোর্চার বক্তব্য, পুলিশ-প্রশাসনের অফিসারেরা পাহাড়ে অত্যাচার চালাচ্ছেন। রাতে এলাকায় এলাকায় পুলিশি অভিযান চলছে। নিরীহ বাসিন্দাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। সম্প্রতি সুকনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের গাড়ি ভাঙা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৫০
Share:

আন্দোলন: কালিম্পঙে নারী মোর্চার মিছিলে। —নিজস্ব চিত্র।

মিছিল থেকে পুলিশের ব্যারিকেড, প্রশাসনিক দফতরের সামনে ‘ব্রা’ ছুড়ে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করলেন নারী মোর্চার সদস্যরা। গত মঙ্গলবার দুপুরে কালিম্পঙের জেলাশাসক এবং থানায় সামনে ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে পাহাড় জুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছে। মোর্চা সূত্রের খবর, কালিম্পঙের পর দার্জিলিং, কার্শিয়াং, মিরিকেও একই বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হবে।

Advertisement

নারী মোর্চার বক্তব্য, পুলিশ-প্রশাসনের অফিসারেরা পাহাড়ে অত্যাচার চালাচ্ছেন। রাতে এলাকায় এলাকায় পুলিশি অভিযান চলছে। নিরীহ বাসিন্দাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। সম্প্রতি সুকনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের গাড়ি ভাঙা হয়েছে। নারী মোর্চার নেত্রীদের দাবি, ‘‘মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া দূরের কথা, এরা নিজেরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে নানা কাজকর্ম করছেন। তাই পুলিশ-প্রশাসনের অফিসারদের মহিলাদের অন্তর্বাস পড়ে থাকা উচিত।’’

মহিলাদের অন্তর্বাস জামা কাপড়ের উপরে আলাদা করে পরে বা রাস্তায় ছুড়ে ফেলে প্রতিবাদ সারা বিশ্বেই বিভিন্ন প্রান্তে হয়। কখনও তার লক্ষ্য সেনাবাহিনী বা আধা সামরিক বাহিনী, কখনও তা করা হয় নারীবাদী আন্দোলনের জন্য।

Advertisement

কিন্তু পাহাড়ের এক প্রশাসনিক আধিকারিকের মতে, এই এলাকায় এমন প্রতিবাদ সম্ভবত এই প্রথম।

পাহাড়ে মোর্চার আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই আন্দোলনে পুরো ভাগে থাকছেন নারী মোর্চার সদস্যরা। প্রতিদিনই নিয়ম করে মিছিল, মিটিং, থানা ঘেরাও চলছে। গত মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ কালিম্পং থানা এবং জেলাশাসকের অফিসের সামনে মহিলারা বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রতিদিনের মতো থানায় সামনে লোহার ব্যারিকেড এবং জেলাশাসকের অফিসের সামনে স্টিলের ব্যারিকেড রাখা হয়। হঠাৎ করে নারী মোর্চার একদল সদস্য ব্যাগ, হাতের ঝোলা থেকে অন্তর্বাস বার করে ছুড়ে মারা শুরু করেন। অফিসারদের চুড়ি পড়ে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। ঘণ্টা খানেক এমন প্রতিবাদ চলে। পরে মহিলারা মিছিল করে ফিরে যান।

বিষয়টি নিয়ে মোর্চার তরফে কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা জানান, নারী মোর্চার আন্দোলন বিভিন্ন ধরণের হচ্ছে। এটাই একটা প্রতিবাদ। আসলে ওঁরা পুরুষ পুলিশ-প্রশাসনের অফিসারদের মহিলাদের মতো পোশাক পরে ঘোরার পরামর্শ দিয়েছেন।

গত সপ্তাহখানেক পাহাড়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ না হলেও মঙ্গলবার রাত থেকে আবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার রাতে সমতল থেকে দার্জিলিঙের যাওয়ার সময় আনাজপাতির গাড়িতে আগুন ধরানো হয়। যাত্রী ও চালকদের মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিছু আনাজ লুঠও হয়েছে। রংবুলে একটি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের গাড়িতে ভাঙচুর হয়েছে। তেমনই, সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের ২৭ মাইলে একটি ছোট ট্রাকে আগুন ধরানো হয়েছে। পরে আরেকটি বাসেও ভাঙচুর করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন