ডাক্তারদের আন্দোলন, তবে বন্ধ নয় পরিষেবা

মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার পরিবর্তে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন চালু করতে কেন্দ্র যে বিল আনছে, তার বিরুদ্ধে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও প্রতিবাদ জানাল চিকিৎসকদের একাংশ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৭
Share:

মিছিল: কেন্দ্রের বিলের প্রতিবাদে ডাক্তাররা। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার পরিবর্তে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন চালু করতে কেন্দ্র যে বিল আনছে, তার বিরুদ্ধে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও প্রতিবাদ জানাল চিকিৎসকদের একাংশ। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের বিভিন্ন শাখার তরফে মঙ্গলবার কালো ব্যাজ পড়ে, নার্সিংহোমগুলোর একাংশে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত বহির্বিভাগ বা চেম্বার বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানানো হয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইএমএ-র তরফে প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল হয়। তবে সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়নি। হাসপাতালগুলোতে বহির্বিভাগও অন্য দিনের মতোই চলেছে।

Advertisement

জলপাইগুড়ির দায়িত্বে থাকা আইএমএ’র উত্তরবঙ্গের কোঅর্ডিনেটর সুশান্ত রায় জানান, এ দিন সকাল ৬টা থেকে নার্সিংহোমগুলোর বহির্বিভাগ এবং প্রাইভেট চেম্বারে চিকিৎসকেরা বসেননি। তবে হাসপাতালগুলোতে কোনও রকম পরিষেবা বন্ধ করা হয়নি। চিকিৎসকেরা সেখানে কালো ব্যাজ পড়ে প্রতিবাদ জানান। তবে এ দিন বিলটি সংশোধনের জন্য পাঠানো হচ্ছে খবর পেলে দুপুরের পর অন্দোলন স্থগিত করা হয়। চেম্বার খোলেন চিকিৎসকেরা।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইএমএ-র সম্পাদক সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘এমএনসি কালা বিল। নতুন আইনে সদস্যরা মনোনীত হবে। চিকিৎসকদের ক্ষমতা খর্ব করা হচ্ছে। ইন্টার্নশিপের পর আবার পরীক্ষায় বসতে বলা হচ্ছে। তাতে পক্ষান্তরে স্বাস্থ্য ইউনিভার্সিটির পড়াশোনাকে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে। হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদের চিকিৎসকরা অ্যালপ্যাথির ওষুধ লিখতে পারবেন। হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা ঠিক রেখেই এ দিন ওই বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।’’

Advertisement

মিছিলে সামিল হন অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায়ও। সংগঠনের শিলিগুড়ি শাখার সম্পাদক অভিষেক বিশ্বাস জানান, হাসপাতালে কোনও পরিষেবা বন্ধ ছিল না। নার্সিংহোমগুলোতে জরুরি পরিষেবাও ঠিক রাখা হয়। তবে কিছু নার্সিংহোমে বহির্বিভাগে পরিষেবা বন্ধ ছিল।

কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালের আউটডোরের সামনে জড়ো হন অনেক ডাক্তার। বিক্ষোভ দেখান। কিছু ক্ষণ কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। সেই সময় রোগীদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বলে অভিযোগ। তবে আইএমএ-র সদস্য কোচবিহার জেলা হাসপাতালের সুপার জয়দেব বর্মন দাবি করেন, ‘‘সামান্য সময়ের জন্য কর্মবিরতি হয়। তাতে বহির্বিভাগে তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি। অন্তর্বিভাগ এবং জরুরি পরিষেবা পুরোপুরি সচল ছিল।’’ ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল ও ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বহির্বিভাগ এ দিন খোলা ছিল। রোগীর ভিড়ও ছিল অন্য দিনের মতোই।

পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বহির্বিভাগে। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন প্রায় আড়াই হাজার রোগী চিকিৎসার জন্য বহির্বিভাগে হাজির হয়েছিলেন। এ দিন সাড়ে তিনটে নাগাদ ইংরেজবাজার শহরে মিছিল করেন আইএমএ’র মালদহ শাখার চিকিৎসকেরা। সংগঠনের মালদহ শাখার সভাপতি তাপস চক্রবতী বলেন, “রোগীদের স্বার্থে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। তবে কেন্দ্রের আইনের বিরোধিতায় এ দিন আমরা সকালে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছি।” রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগ খোলা ছিল। আইএমএ-র সদস্যরা কিছুক্ষণ বিক্ষোভ করেন। আইএমএ-র সদস্যদের দাবি, এ দিন উত্তর দিনাজপুরে চিকিৎসকেরা সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ রেখেছিলেন।

আইএমএ-র আন্দোলন চললেও ইসলামপুর হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা ছিল স্বাভাবিক। এ দিন ইসলামপুর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা কালো ব্যাজ পড়ে প্রতিবাদ জানান। ইসলামপুর হাসপাতালের চিকিৎসক শান্তুনু দত্ত জানান, সমস্ত রকম পরিষেবা দিযেছেন চিকিৎসকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন