নাজেহাল: অবরোধের ধাক্কায় দেরিতে চলছে একাধিক ট্রেনে। ওভারব্রিজে বসেই অপেক্ষা যাত্রীদের। এনজেপি স্টেশনে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
রেল অবরোধ হয়েছে এই রাজ্যের মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরে। আর হয়েছে অসমে। সোমবার তার জেরে চরম ভোগান্তির শিকার হলেন এনজেপি স্টেশনের যাত্রীরাও। তিন জায়গায় আদিবাসী সংগঠনের রেল অবরোধে বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়ে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন। স্টেশনে আটকে পড়েন প্রায় ৫ হাজার যাত্রী। কারও গন্তব্য সেকেন্দরাবাদ, কেউ বা অসম, কলকাতা যাবেন। স্টেশন চত্বরের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে ভিড়। সিঁড়িগুলোতেও অনেকে বসে পড়েন। বাদ যায়নি স্টেশনের ওভারব্রিজও, সেখানেও চাদর পেতে শুয়ে পড়েছেন অনেকে।
সকাল থেকে গরিবরথ এক্সপ্রেস তিন ঘণ্টা ধরে এনজেপিতে দাঁড়িয়েছিল। পাঁচ ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে ছিল অমরনাথ এক্সপ্রেসও। পিছিয়ে দেওয়া হয় উদয়পুর সিটি এক্সপ্রেসের সময়। এ দিন বঙ্গাইগাঁও যাওয়ার ট্রেনও দেরি করে আসে এনজেপিতে প্রবল সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা।
যেমন, পুষ্পা চৌধুরীর এ দিন নদিয়া যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি এনজেপিতে আটকে পড়েন। তিনি জানান, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শুধু জল খেয়ে কাটিয়েছেন। সীমিত পরিমাণে টাকা থাকায় খরচও করতে পারছেন না তিনি। এই ভাবে আর কতক্ষণ সেই প্রশ্ন মনে পড়তেই আশঙ্কায় ভুগছিলেন তিনি।
বুধবার দার্জিলিং ঘুরতে এসেছেন অসমের রামু, বিশাল মণ্ডল, মণীশ কুমাররা। তাঁদের মধ্যে রামু দার্জিলিঙে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সোমবার ভোরে অসমে ফিরে যাওয়ার জন্য তাঁরা এনজেপিতে যান। ট্রেন না থাকায় সমস্যা পড়েন তাঁরা। সঙ্গে একজন অসুস্থ থাকায় দিশেহারা অবস্থায় পড়ে যান অসমের ওই বাসিন্দারা।
স্টেশনের ওভারব্রিজের উপরে দেখা গেল পরিমল রায়, শচীন বর্মন, সুশান্ত বর্মনদের। মাথাভাঙা থেকে সেকেন্দরাবাদ যাবেন বলে এনজেপিতে এসেছেন তাঁরা। সকাল থেকে স্টেশনের ভিতরে বসার জায়গা না পেয়ে বাইরে স্টেশনের উপরে ওঠার সিঁড়িতে বসেছিলেন তাঁরা। ট্রেন কখন ছাড়বে জানতে গেলে রেলের আধিকারিকরা কিছুই বলতে পারেননি বলে তাঁদের অভিযোগ।
এনজেপি স্টেশনে থাকা যাত্রীদের অভিযোগ, যে ট্রেন আসার সঠিক তথ্য মাইক্রোফোনে বলা হয়নি। যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য কোনও রেল পুলিশকেও ওভারব্রিজগুলোতে দেখা গেল না। স্টেশনের ফুড প্লাজায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। অনেকেই সেখানে বসার জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন। কেউ বা বিস্কুট ও জল খেয়েই থাকছেন প্ল্যাটফর্মে। এই ব্যাপারে স্টেশন ম্যানেজার কিছু বলতে চাননি। উত্তর পূর্ব রেলের কাটিয়ার ডিভিশনের অ্যাডিশনাল ডিভিশন ম্যানেজার পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘যাত্রীদের সুরক্ষার দিকে নজর রাখা হচ্ছে। কারও যাতে খাবার-পানীয়ের সমস্য না হয় সে দিকেও খেয়াল রাখা হচ্ছে রেলের তরফে।’’