বাড়ছে সারমেয়র সংখ্যা। শিলিগুড়ির রাস্তায় এমন দৃশ্য প্রায় প্রতিদিনের। নিজস্ব চিত্র
কুকুরের কামড়ের প্রতিষেধক নিতে ভিড় বাড়ছে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিদিন কুকুরের কামড়ে জখম প্রায় একশো রোগী প্রতিষেধক ইঞ্জেকশন নিতে আসছেন। শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকায় কুকুরের উপদ্রব বন্ধ করতে পুরসভার তরফে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী বাসিন্দারা।
শিলিগুড়ি পুরসভার ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতো বলেন, ‘‘সমস্যা মেটাতে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা পুরসভার জায়গায় কুকুর ধরে রাখার ব্যবস্থা এবং পরে নির্বীজকরণের কাজ করবেন।’’ মাস চারেক আগে পুরসভা এবং ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে কিছু কুকুরের নির্বীজকরণ হলেও সেই কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। ওই সংস্থা অ্যানিম্যাল লিঙ্কের কর্ণধার শ্যামা চৌধুরী জানান, ইস্টার্ন বাইপাসে ডাম্পিং গ্রাউন্ড লাগোয়া পুরসভার জায়গায় কুকুর ধরে রাখার একটি পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে দু’শো কুকুর রাখা যাবে। তা ছাড়া নির্বীজকরণও করা হবে। ইতিমধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান।
কুকুরের কামড়ে জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা চেকচাঁদ শর্মা, বিশ্বপ্রতাপ রায়, বিষ্ণু হাজরা শহরে কুকুরের উপদ্রব নিয়ে সরব হন। টেকচাঁদবাবুর কথায়, ‘‘পুজোর কাজে গত বৃহস্পতিবার ফুলেশ্বরী এলাকায় গিয়েছিলাম। সেখানেই রাস্তার একটি কুকুর আমাকে আচমকা কামড়ে দেয়।’’ বিষ্ণুবাবু ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ ভারতনগরের বাসিন্দা। গত পাঁচ জানুয়ারি তাঁকেও রাস্তার একটি কুকুর কামড়ে দেয়। এ দিন তাই শিলিগুড়ি হাসপাতালে প্রতিষেধক নিতে আসেন তিনি। ডাবগ্রামে পলিটেকনিকের ছাত্র গোপীনাথ চক্রবর্তী। হোটেলে খেতে যাওয়ার সময় পথে তাঁকে কুকুরের কামড় খেতে হয়। বিষ্ণুবাবু বলেন, ‘‘বারবার বলার পরেও পুরসভার তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। রাতে বিভিন্ন রাস্তায় ৩০-৩৫ টি কুকুরের দল ঘুরে বেড়ায়। রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা যায় না কুকুরের ভয়ে।’’ ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মালতি সাহাকেও কিছুদিন আগে কুকুরে কামড়েছে। তিনি বলেন, ‘‘কুকুরের অত্যাচার বন্ধ করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’’
শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল বলেন, ‘‘কুকুরের কামড়ের প্রতিষেধক নিতে প্রচুর বাসিন্দা হাসপাতালে আসেন। গড়ে একশোর মতো রোগী আসছেন প্রতিদিন।’’