উদ্বোধন: পুজোর গাইড ম্যাপ। নিজস্ব চিত্র
মহরমের দিন ভাসান দিতে চেয়ে কোনও পুজো কমিটি আবেদন করেনি। হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে মহরমের দিন তাজিয়া এবং বিসর্জনের শোভাযাত্রা করার জন্য দু’টি পৃথক রুট চিহ্নিত করতে হবে। সেই মতো শিলিগুড়ি পুলিশও প্রাথমিক প্রস্তুতি সেরে রেখেছে। মহরমের দিন ভাসান দিতে হলে পুলিশের থেকে অনুমতি নিতে হবে। যদিও শিলিগুড়ির কোনও উদ্যোক্তাই এখনও তেমন কোনও আবেদন করেনি। বিগ বাজেটের হোক অথবা মাঝারি বেশিরভাগ পুজো কমিটির অভিমত, মহরমের দিন শহরের রাস্তায় তাজিয়াই থাকুক। একাদশীর দিন ছেড়ে তার আগে পরে বিসর্জনে প্রস্তুত হচ্ছে শিলিগুড়ি।
শনিবার সকালে শিলিগুড়িতে পুজো গাইড ম্যাপ প্রকাশিত হয়। পর্যটন দফতর এবং শিলিগুড়ি পুলিশের যৌথ উদ্যোগে এই ম্যাপ প্রকাশিত হয়েছে। পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব, জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনার বরুণ রায়, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার সিংহ ম্যাপ প্রকাশ করেছেন। হিলকার্ট রোডে মৈনাক অতিথি নিবাসের সামনে মঞ্চ বেঁধে এই অনুষ্ঠানে পর্যটন দফতরের থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছিল ঢাকেরও। তৃতীয়ার সকালে ঢাকের বোলে ম্যাপ প্রকাশ অনুষ্ঠান দেখতে ভিড় জমে যায় হিলকার্ট রোডে। পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের কথায়, ‘‘এই যে উৎসবের মেজাজ শুরু হল আশা করি তা নির্বিঘ্ন এবং নিরুপদ্রব থাকবে।’’
পুজোর দিনগুলিতে শহরের নিরাপত্তার জন্য তিন হাজার পুলিশ কর্মী রাস্তায় থাকবেন বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। শিলিগুড়ির কাছেই নেপাল এবং বাংলাদেশ সীমান্ত। উৎসবের সময়ে দুই সীমান্তে কড়া নজরদারি চালাতে বিএসএফ এবং এসএসবিকে অনুরোধ করা হয়েছে এবং সাড়াও মিলেছে বলে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন। ভাসানকে কেন্দ্র করে যে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছিল তার রেশও শিলিগুড়িতে পড়বে না বলে দাবি করে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘মহরমের দিন ভাসান দেওয়ার জন্য কোনও পুজো কমিটি আবেদন করেনি। দশমী থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত সময় রয়েছে। কোনও সমস্যাই হবে না।’’
শহরের অন্যতম বিগবাজেটের পুজো সুব্রত সঙ্ঘের সম্পাদক পার্থ সাহা বলেন, ‘‘আমরা ২ অক্টোবর ভাসান দেব। শোভাযাত্রাও হবে। কমিটির সকলে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে মহরমের দিন ভাসান হবে না। সে দিন সকলে মিলে তাজিয়া নিয়ে শোভাযাত্রা দেখব।’’ অসুর দমন এবার পুজোর থিম শিলিগুড়ির ক্ষণিক সঙ্ঘের। পুজো কমিটির সভাপতি মানু সেনের কথায়, ‘‘মোদ্দা কথা হল, সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে। এই শহর সকলের। একজনের জন্য আরেকজনের যাতে সমস্যা না হয় তা দেখতেই হবে। মহরমের দিন নয়, তার পরদিন আমরা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় হাঁটব।’’