সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে টেন্ডার খুশি জেলা

হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির জন্য টেন্ডার ডাকল পূর্ত দফতর। রাজ্য সূত্রে খবর, এপ্রিলে এই কাজ শুরু হয়ে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৮
Share:

প্রস্তাবিত: এই জমিতেই হবে সার্কিট বেঞ্চের ভবন। নিজস্ব চিত্র

দাবিটি ৫৫ বছরের পুরনো। এমনকী, জলপাইগুড়িকে সার্কিট বেঞ্চের জন্য উপযুক্ত বলে হাইকোর্ট বেছে নিয়েছে, তা-ও দু’দশক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু জমিতে এখনও কাজ শুরু হয়নি। সম্প্রতি তারই সূত্রপাত করল রাজ্য সরকার। হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির জন্য টেন্ডার ডাকল পূর্ত দফতর। রাজ্য সূত্রে খবর, এপ্রিলে এই কাজ শুরু হয়ে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। আর জলপাইগুড়ি চাইছে, ভবন ও অন্য পরিকাঠামো তৈরি হয়ে গেলেই যাতে বেঞ্চটি চালু করা যায়, সে ব্যাপারে উদ্যোগী হোক সংশ্লিষ্ট সকলেই।

Advertisement

জলপাইগুড়িতে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ গঠনের দাবি দীর্ঘদিনের৷ আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ১৯৬৩ সালে জলপাইগুড়িতে প্রথম সার্কিট বেঞ্চ গঠনের দাবি উঠেছিল৷ ১৯৯৪ সালে হাইকোর্টের তিন বিচারপতির কমিটিও সার্কিট বেঞ্চ গঠনের জন্য জলপাইগুড়ি উপযুক্ত বলে মনে করেন৷ ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে তা গৃহীতও হয়৷ এর পর বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের কাছে তাদের সুপারিশ পাঠায় রাজ্য সরকার৷ পরে পাহাড়পুরের কাছে কম্পোজিট কমপ্লেক্সে ৪৫ একর জমির ব্যবস্থা করে জেলা প্রশাসন৷ যেখানে আদালত ভবন, আদালতের দফতর ছাড়াও বিচারপতিদের আবাসন ও অন্যান্য পরিকাঠামো তৈরি হওয়ার কথা৷

জলপাইগুড়ির আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পর নানা কারণে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো গঠনের কাজ বিশেষ এগোয়নি৷ তবে সব বাধা কাটিয়ে শেষ অবধি যে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো গঠন নিয়ে পূর্ত দফতর টেন্ডার ডেকেছে, তাতে খুশি প্রায় সকলেই৷

Advertisement

সার্কিট বেঞ্চ ও সার্বিক উন্নয়ন দাবি আদায় সমন্বয় কমিটির সম্পাদক কমলকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শুধু জলপাইগুড়িই নয়, গোটা উত্তরবঙ্গের কাছেই এই সার্কিট বেঞ্চ দীর্ঘদিনের চাহিদা৷ পূর্ত দফতরের তরফে এর স্থায়ী পরিকাঠামো গঠনের জন্য টেন্ডারের ডাক দেওয়াটা একটা ইতিবাচক দিক৷ রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাই৷’’ কমলবাবু বলেন, ‘‘আমরা চাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এর কাজ শেষ হোক৷ এবং এই পরিকাঠামো গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই যাতে এখানে সার্কিট বেঞ্চ চালু হয়, সে ব্যাপারে এখন থেকেই হাইকোর্টের সঙ্গে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ শুরু করুক রাজ্য সরকার৷’’ জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দীপক দত্তও সার্কিট বেঞ্চের কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় খুশি৷ তিনি বলেন, ‘‘এখন দ্রুত শুরু হোক কাজ পরিকাঠামো তৈরির কাজ৷’’

তবে জলপাইগুড়ির প্রবীণ কংগ্রেস নেতা দেবপ্রসাদ রায় অবশ্য জানান, আগে একবার সার্কিট বেঞ্চের জন্য ৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। সেই মতো পরিকাঠামোর উন্নয়নে একটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল বলেও তিনি শুনেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পরে সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়৷ ফলে যতক্ষণ না কাজ শেষ হচ্ছে ততক্ষণ অনিশ্চয়তা থেকেই যাবে৷’’

তবে পূর্ত দফতরের মুখ্য বাস্তুকার সৌমিত্র মাইতি জানিয়েছেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়ার যাবতীয় কাজ শেষ হয়ে যাবে৷ আগামী অর্থবর্ষের শুরুতেই সার্কিট বেঞ্চের পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে আশা করেন তিনি। আড়াই বছরের মধ্যে সেই কাজ সম্পূর্ণ হবে বলেও দাবি মুখ্য বাস্তুকারের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন