প্রশ্নফাঁস কাণ্ড

১০ মিনিটেই এসে যেত প্রশ্ন, সিআইডি-র জালে ধরা পড়ল ‘খোকাবাবু’

এ দিনই ধৃতকে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করে হেফাজতে নিয়ে বিধাননগরে পাঠায় সিআইডি। দিনমজুর পরিবারের মেধাবী ছাত্র গ্রেফতারের ঘটনায় হতবাক কালিয়াচকের রাজনগর গ্রামপঞ্চায়েতের নয়াগ্রামের বাসিন্দারা। সিআইডি হেফাজতে থাকাকালীন মাধ্যমিকের প্রশ্নফাঁস কাণ্ড নিয়ে ‘খোকাবাবু’ গ্রুপের ভূমিকা প্রসঙ্গে পরপর প্রশ্নের জবাব দিলেন ওই পরীক্ষার্থী।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা 

মালদহ শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৩
Share:

লজ্জা: মাধ্যমিকে প্রশ্নফাঁস কাণ্ডে সিআইডির জালে আরও এক যুবক। মালদহে বুধবার। নিজস্ব চিত্র

মাধ্যমিকে প্রশ্নফাঁস কাণ্ডে সিআইডি-র জালে ধরা পড়ল ‘খোকাবাবু’ গ্রুপের অন্যতম সদস্য। বুধবার ভোরে ইংরেজবাজার শহর লাগুয়া গাবগাছি এলাকার বেসরকারি আবাসিক মিশনের হস্টেল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া ওই ছাত্রকে গ্রেফতার করে সিআইডি। এ দিনই ধৃতকে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করে হেফাজতে নিয়ে বিধাননগরে পাঠায় সিআইডি। দিনমজুর পরিবারের মেধাবী ছাত্র গ্রেফতারের ঘটনায় হতবাক কালিয়াচকের রাজনগর গ্রামপঞ্চায়েতের নয়াগ্রামের বাসিন্দারা। সিআইডি হেফাজতে থাকাকালীন মাধ্যমিকের প্রশ্নফাঁস কাণ্ড নিয়ে ‘খোকাবাবু’ গ্রুপের ভূমিকা প্রসঙ্গে পরপর প্রশ্নের জবাব দিলেন ওই পরীক্ষার্থী। তাঁর সঙ্গে সেই কথোপকথনের বাছাই করা অংশ।

Advertisement

প্রশ্ন: ‘খোকাবাবু’ গ্রুপটা কী?

Advertisement

ধৃত ছাত্র: ‘খোকাবাবু’ নামে একটা হোয়াটস্যাপ গ্রুপ রয়েছে। সেই গ্রুপে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী থেকে শুরু করে আমাদের মতো উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরাও রয়েছে।

প্রশ্ন: কবে খোলা হয়েছিল ‘খোকাবাবু’ গ্রুপ?

ধৃত ছাত্র: মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দু’দিন আগে গ্রুপটি খোলা হয়। সেই গ্রুপে প্রায় দেড়শো সদস্য রয়েছে।

প্রশ্ন: সকলের সঙ্গে পরিচয় কী ভাবে হল?

ধৃত ছাত্র: গ্রুপে আমরা কেউ কাউকে কখনও দেখিনি। আমাকে যুক্ত করার পিছনে রয়েছে বর্ধমানের এক আবাসিক মিশনের ছাত্র। তার নাম শাহবাজ। কালিয়াচকের নয়াগ্রামের বাসিন্দা হলেও ওই মিশনে আমি সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি। তখনই ওর সঙ্গে আলাপ। গ্রুপের ‘অ্যাডমিন’ও শাহবাজই। সে-ই আমাকে গ্রুপটিতে যুক্ত করে।

প্রশ্ন: গ্রুপে মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র কখন আপলোড হত?

ধৃত ছাত্র: ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ প্রশ্নপত্র হাতে পেত পরীক্ষার্থীরা। তার দশ মিনিটের মধ্যেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রশ্ন আপলোড হয়ে যেত। অনেক ক্ষেত্রে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরাই প্রশ্নপত্র গ্রুপে আপলোড করত।

প্রশ্ন: পরীক্ষা কেন্দ্রে তো মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ নিষেধ। তার পরেও তারা কী ভাবে মোবাইল নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকত?

ধৃত ছাত্র: এই বিষয়ে আমার তেমন কিছু জানা নেই। তবে শুনেছিলাম গ্রুপে কয়েক জন শিক্ষকও রয়েছেন। তাই গ্রুপ খোলার সময়ই আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কেউ ওই হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে কোনও রকম গালাগালি দেবে না।

প্রশ্ন: উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ভূমিকা কী?

ধৃত ছাত্র: আমি বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। প্রশ্নপত্র গ্রুপে আপলোড হওয়া মাত্রই আমরা উত্তর তৈরি করতে বসে যেতাম। তার পরে সেই উত্তর গ্রুপে আপলোড করে দিতাম। বিষয় অনুযায়ী আমাদের মতো উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রদের রাখা হয়েছিল। বিষয়ভিত্তিক জবাবই লিখে দিতাম আমরা। এর জন্য আমরা কিন্তু কোনও কিছু পেতাম না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন