দাপট: আইসি-র সামনে হাত তুলে মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
ফের মেজাজ হারালেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী, তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। বুধবার দুপুরে কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকে সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
সেখানে গিয়ে মেজাজ হারিয়ে কোতোয়ালি থানার আইসি সমীর পালের কাছে কৈফিয়ত চান। কেন বিডিও অফিস চত্বরে এত মানুষ তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। দ্রুত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি করেন। তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের উপরে এ ভাবে কেন আক্রমণ হল? কী করছেন? কাঠের পুতুলের মতো দাঁড়িয়ে আছেন?’’ সেই সময় বিব্রত মুখে আইসি বলেন, “ম্যানেজ করার চেষ্টা করছি।” রবিবাবু বলেন, “ম্যানেজ করলে এত ঝামেলা, ভিড় কেন? এখানে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে দেবেন না। আমার দলের উপরে চাপ পড়ছে। আপনি কাঠের পুতুলের মতো দাঁড়িয়ে আছেন? কী আপনার ইন্টারেস্ট? কেন আপনি অ্যাকশন নিতে পাচ্ছেন না? এর ফলে নির্বাচন কেঁচিয়ে যাবে।’’ এর প্রতিফলও ভুগতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। গত বিধানসভা নির্বাচনের দিনও মেজাজ হারান মন্ত্রী। সেই সময় দলের এক কর্মীকে চড় মারেন তিনি।
রবিবাবুর এই আচরণে প্রশ্ন উঠেছে দলেই। পুলিশের এক আধিকারিকের সঙ্গে তিনি এ ভাবে কথা বলায় দলের ভাবমূর্তিই নষ্ট হচ্ছে বলে কেউ কেউ মনে করেন।
এ দিন বেলা ১২ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে কোচবিহার ১ নম্বর ব্লক অফিসের সামনে। অভিযোগ, বিরোধীদের কেউ যাতে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে না পারে সে জন্য তৃণমূলের কিছু কর্মী সশস্ত্র অবস্থায় ব্লক অফিসের সামনে জড়ো হয়েছিল। এর পাশাপাশি তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যেও সেখানে বচসা শুরু হয়। সেই সময় সেখানে এক রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। ওই সময়ের মধ্যেই সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা সেখানে পৌঁছলে তাঁদের উপর হামলা শুরু হয়। সংবাদমাধ্যমের তিন প্রতিনিধিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁদের মোবাইল ফোন ও ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানিয়েছে, পরে ঘটনাস্থল থেকে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে হাসান মিয়াঁ নামে এক তৃণমূল কর্মী মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত। এক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” রবিবাবুর দাবি, ‘‘তৃণমূল দায়ি নয়। যে সমস্ত দুষ্কৃতী ওই ঘটনায় জড়িত তাঁদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।”
অভিযোগ, ব্লক তৃণমূলের সভাপতির সঙ্গে কার্যকরী সভাপতির গোষ্ঠীর বচসা সামনে চলে আসে। দুই পক্ষই নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে। তখন এক রাউন্ড গুলি চলে বলেও অভিযোগ। দুই নেতাই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।এ দিন শীতলখুচিতেও মনোনয়ন তুলতে গিয়ে আক্রান্ত হন কয়েকজন বিজেপি কর্মী। আচমকা চারদিক থেকে ঘিরে ধরে ভোটার পরিচয় পত্র, মোবাইল কেড়ে লাথি মারতে মারতে তাঁকে এলাকা থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।