ছাত্রীদের পথ অবরোধ

সাইকেলের দাবিতে বিক্ষোভ সামলাতে নামল র‌্যাফ

সাইকেলের দাবিতে ছাত্র বিক্ষোভে ধুন্ধুমার শিলিগুড়িতে। চলল পথ অবরোধ, স্কুলে ভাঙচুর। পুলিশ ও র‌্যাফ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবস্থা সামাল দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৭ ০২:০১
Share:

বিক্ষোভ: সবুজ সাথীর সাইকেল মেলেনি। রাস্তায় নামল বুদ্ধভারতী স্কুলের কিছু ছাত্রছাত্রী। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

সাইকেলের দাবিতে ছাত্র বিক্ষোভে ধুন্ধুমার শিলিগুড়িতে। চলল পথ অবরোধ, স্কুলে ভাঙচুর। পুলিশ ও র‌্যাফ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবস্থা সামাল দেয়।

Advertisement

সবুজসাথী প্রকল্পে শিলিগুড়ির বুদ্ধ ভারতী স্কুলের দশম শ্রেণির ২৮৯ জন ছাত্রছাত্রীকে সাইকেল দেওয়ার কথা। কিন্তু দিন ছ’য়েক আগে ১১৪টি সাইকেল পাঠানো হয় স্কুলে। বাকি সাইকেল আসার আগেই মঙ্গলবার ছাত্রছাত্রীদের একাংশের মধ্যে সাইকেল বিলি শুরু হয়। আর তাতেই বাধে বিপত্তি।

এক সঙ্গে সবাইকে সাইকেল বিলির দাবিতে পড়ুয়ারা স্কুলের সামনের রাস্তা সচিত্র পাল সরণি অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। উত্তেজিত ছাত্ররা স্কুলের চেয়ার-টেবিল ফুলের টব ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও র‌্যাফ ঘটনাস্থলে যায়। শেষপর্যন্ত স্কুল কর্তৃপক্ষ এ দিন সাইকেল বিলির কর্মসূচি বাতিল করলে পৌঁনে তিনটে নাগাদ অবরোধ ওঠে। পড়ুয়া বিশ্বজিৎ পাল, রিঙ্কি রায়দের অভিযোগ, কিছু ছাত্রছাত্রীকে সাইকেল দেওয়া হচ্ছে আর বাকিরা কবে পাবেন তা নির্দিষ্ট করে জানানো হচ্ছে না। সে জন্যই এক সঙ্গে দেওয়ার দাবি তোলা হয়।

Advertisement

ভক্তিনগর থানা এলাকার ওই স্কুল জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের অধীনে।

বিডিও প্রেমা শেরপা বলেন, ‘‘সমস্ত সাইকেল না-পৌঁছলেও কেন তারা বিলি করতে গেলেন বুঝতে পারছি না। আমার সঙ্গেও কথা বলেননি। আমার সঙ্গে সহকারী স্কুল পরিদর্শক রাজীব চক্রবর্তীর কথা হয়েছিল। তিনি জানিয়েছিলেন দুই তিন দিনের মধ্যেই বাকি সাইকেল পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। সেগুলো পেলে বিলি করতে পারতেন। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’’

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁরা ছ’দিন অপেক্ষা করেন বাকি সাইকেল আসার জন্য। দিন কয়েক আগে সহকারি স্কুল পরিদর্শক রাজীববাবুর কাছে জানতে পারেন বাকি সাইকেলগুলি পাওয়ার জন্য আরও দু’ তিন দিন অপেক্ষা করতে হবে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপ্নেন্দু নন্দী জানান, এলাকার চোরের উপদ্রব। স্কুলের মিড ডে মিলের জিনিস একাধিকবার চুরি হয়েছে। তাই সাইকেলগুলো রাতে পাহারা দেওয়ার জন্য লোক রাখতে হয়।

নিরাপত্তার জন্য ভক্তিনগর থানাকে লিখিতভাবে জানাতে গেলে তারা আবেদন নেয়নি। তবে স্কুলের নৈশপ্রহরীর সঙ্গে চার দিন চা রজন সিভিক ভলান্টিয়ার দেন। এ দিন তাঁদেরও তুলে নেওয়া হয়।

তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের তরফে যাঁকে রাখা হয়েছে তাঁর খরচ এবং সিভিক পুলিশ সকলের খাবারের জন্য এক হাজার টাকা প্রতিদিন খরচ লাগছে। সে জন্য যে সাইকেল রয়েছে তা বিলি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বাকি সাইকেল এলে পরে অন্য পড়ুয়াদের দেওয়া হবে ঠিক হয়।’’ পরিস্থিতির জেরে এ দিন আর সাইকেল বিলি করা হয়নি। স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্যদের বৈঠকে ঠিক হয়েছে বুধবার ব্লক প্রশাসনের কাছে গিয়ে বাকি সাইকেল পাঠানোর আর্জি জানানো হবে।

এ দিন অনুষ্ঠানে বরো চেয়ারম্যান রঞ্জন শীলশর্মা, লাগোয়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সত্যজিৎ অধিকারি, এলাকার কাউন্সিলর রেবা সরকারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। রঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘সব পড়ুয়ার সাইকেল না-আসায় আগেই স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুষ্ঠান করতে বারণ করেছিলাম।’’

তবে অভিভাবকদের একাংশ এই গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ। তাঁদের বক্তব্য, ঘটনার জন্য দায়ি যে-ই হোন না কেন, তার জন্য পঠন-াপঠনের ক্ষতি হওয়া কখনওই উচিত হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন