জলপাইগুড়িতে বৃষ্টি।নিজস্ব চিত্র।
সকাল থেকেই কালো মেঘ ছিল আকাশে। দুপুরের পর হঠাৎই ঝড়বৃষ্টি শুরু হয় উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায়। আলিপুরদুয়ার থেকে জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ি থেকে ইসলামপুর ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়। ঘনঘন বাজও পড়তে থাকে। হাওয়ায় গাছ পড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গিয়েছে কিছু এলাকায়। বিকেলের পর থেকে আলিপুরদুয়ার এবং ময়নাগুড়ির কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবারহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তাতে ব্যাহত হয় জনজীবনও। ঝড় না হলেও বৃষ্টি হয়েছে শিলিগুড়িতেও।
এ দিন দুপুর দু’টো নাগাদ প্রবল ঝড় বৃষ্টি শুরু হয় জলপাইগুড়িতে। শহরের বেশ কিছু রাস্তা গাছ পড়ে বন্ধ হয়ে যায়। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বাহাদুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় ঝড়ে ১৫টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাড়িগুলির টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। জলপাইগুড়ির বিডিও অফিসের একটি ঘরের টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বিডিও থেন্ডুপ ভুটিয়া বলেন, “বাহাদুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাদের বাড়ির টিনের চাল উড়ে গিয়েছে, তাঁদের পলিথিনের শিট পাঠানো হয়েছে।” জলপাইগুড়ি শহরের অধিকাংশ এলাকায় দুপুরের পর থেকে বিদ্যুৎ ছিল না। সন্ধ্যার পর কিছু এলাকাতে এলেও অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। ইটাহারে প্রায় দেড়শো কাঁচাবাড়ি ভেঙেছে।
গত কয়েক দিনের প্রবল গরমের পরে এ দিন দুপুরে বৃষ্টিতে স্বস্তি পেয়েছেন মালদহবাসী। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বৃষ্টি শুরু হয় জেলা জুড়ে। বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ও হয়। তবে এই ঝড় বৃষ্টিতে আমের কোনও ক্ষতি হয়নি বলে দাবি উদ্যানপালন দফতরের কর্তাদের। মালদহের উদ্যান পালন দফতরের সহ অধিকর্তা রাহুল চক্রবতী বলেন, ‘‘শিলাবৃষ্টি হলে আমের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। শিলাবৃষ্টি না হওয়ায় আমের পক্ষে খুবই ভাল হয়েছে। আমের গুণগত মান আরও বাড়বে।’’ এ দিকে, জেলাতে তুমুল বৃষ্টি হওয়ায় প্যাচপ্যাচে গরম থেকে রেহাই পেয়েছেন বাসিন্দারা। ঝড় বৃষ্টি হয়েছে ইসলামপুরেও।
আধ ঘন্টার ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ময়নাগুড়িতে। দুপুর দেড়টা থেকে দুটো পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায় ময়নাগুড়িতে। হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিও শুরু হয়ে যায়। সপ্তাহের মাঝামাঝিতে একেবারে কাজের সময়ে আচমকা দমকা হাওয়া দিয়ে ঝড় শুরু হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়ে যান পথচারীরা। প্রভাব পড়ে দুপুরের বাজার এবং হাটেও। ময়নাগুড়ি থেকে মালবাজারগামী ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে সিঙ্গিমারি এলাকায় বেশ কিছু ছায়াগাছ পড়ে যায়। ঝড় থামতেই মাঝারি আকৃতির ছায়াগাছ জ্বালানির জন্যে সংগ্রহ করতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় গ্রামবাসীদের মধ্যে। অভিযোগ, এ সময়ে ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছের পাশাপাশি প্রচুর গাছও গোড়া থেকে কেটে নিয়ে চলে যান অনেকেই। তবে ময়নাগুড়ি শহরে বড় কোনও গাছ পড়ার খবর মেলেনি। ঝড়ের সময় সাময়িক বিদ্যুত বিপর্যয় হলেও দ্রুতই বিদ্যুৎ পরিষেবাও স্বাভাবিক হয়ে যায়।