বছর ঘুরলেও বন্ধ বাগান, ধুঁকছে শ্রমিকদের পরিবার

২০০৩ সালে প্রথমবারের জন্য বন্ধ হয় রায়পুর চা বাগান। তখনও তীব্র দারিদ্র্যে দিন কেটেছিল শ্রমিক পরিবারগুলোর। ২০১১ সালে আবার বাগান চালু করে নতুন সরকার। দু’বছরের মাথায় ফের বন্ধ হয়ে যা বাগান। তারপরে আবার খোলে ২০১৪ সালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:৩৮
Share:

দুর্দশা: রায়পুর চা বাগানে। নিজস্ব চিত্র

নতুন বছর শুরু হল। এখনও অচল অবস্থা কাটল না রায়পুর চা বাগানে। আজ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাগান নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে বলে জানা গিয়েছে। এর আগে একাধিকবার বৈঠক হলেও বাগান চালু হয়নি। তা সত্ত্বেও আজকের বৈঠক নিয়ে আশায় বুক বাঁধছেন শ্রমিকরা।

Advertisement

জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া এলাকায় রয়েছে রায়পুর চা বাগান। স্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ৬৫০ আর অস্থায়ী শ্রমিক রয়েছেন ১১০০ জন। গত বছর সেপ্টেম্বরে বাগান ছেড়ে চলে যায় ম্যানেজার। তারপর থেকেই বাগান পুরো বন্ধ। ফলে শ্রমিকদের বেতন, পিএফ-ও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শ্রমিকদের অভিযোগ, বাগানে স্বাস্থ্য ও পানীয় জল পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুৎ পরিষেবাও প্রায় বন্ধ। কিন্তু প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ। বাগান শ্রমিক যোশদা মুন্ডা বলেন, ‘‘বাগান বন্ধ থাকায় বাচ্চাদের পড়াশুনা বন্ধ। কোনওরকমে সংসার চলছে। কোনও দিন এক বেলা, কোনওদিন দু’বেলা ভাত জুটছে।’’ এখন কী ভাবে চলছে শ্রমিকদের? তিনি জানান, আলাদা আলাদা করে গোষ্ঠী করে বাগানের পাতা তুলে বাইরে বিক্রি করে কোনওরকমে সংসার চালাচ্ছেন শ্রমিকেরা। কখনও চা গাছের ফুল সিদ্ধ করে খেয়ে পেট ভরছেন তাঁরা। এই অবস্থায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে। এক শ্রমিক রঞ্জিত লোহার বলেন, ‘‘আমাদের দুঃখ কেউ দেখে না। এত দিন হয়ে গেল কিন্তু বাগান চালুর কোনও উদ্যোগ নেই কারোর। এরপরে আমরা নিজেরাই বাগান চালাব।’’

২০০৩ সালে প্রথমবারের জন্য বন্ধ হয় রায়পুর চা বাগান। তখনও তীব্র দারিদ্র্যে দিন কেটেছিল শ্রমিক পরিবারগুলোর। ২০১১ সালে আবার বাগান চালু করে নতুন সরকার। দু’বছরের মাথায় ফের বন্ধ হয়ে যা বাগান। তারপরে আবার খোলে ২০১৪ সালে।

Advertisement

এসজেডিএ চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাগানের বিষয়ে কথা হয়েছে মালিকের সঙ্গে। এখন যা হবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হবে।’’ এ দিকে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান প্রধান হেমব্রম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া রেশন দিয়ে কোনও রকমে চলছে বাগান। এই মালিক চালাতে পারবে না। আমরা চাই নতুন মালিক দিয়ে বাগান চালু করা হোক।’’ আজকের বৈঠকে সমাধানসূত্র বেরনো নিয়ে আশা প্রকাশ করেছেন আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত তরাই ডুর্যাস প্ল্যান্টেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি স্বপন সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement