তিস্তার জলস্তর কমলেও স্রোতের জন্য ত্রাণ শিবিরে আশ্রিতরা ঘরে ফিরতে পারছেন না। আজ, রবিবার নদী উপত্যকার প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করবেন সেচ মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। মালবাজার মহকুমার বাসুসুবা এবং ময়নাগুড়ির বর্মনপাড়া এলাকা ঘুরে দেখার কথা মন্ত্রীর। এ দিকে এখনই ঘরে ফিরে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বুঝে তিস্তা বাঁধের মাটি কেটে স্থায়ী ঘর তৈরির হিড়িক দেখে সেচ কর্তাদের মাথায় হাত পড়েছে।
সিকিম পাহাড়ে ভারি বৃষ্টিপাত না হওয়ায় শনিবার তিস্তা অনেটাই শান্ত ছিল। জলস্তর নেমেছে। তবে কড়া স্রোতের জন্য বাড়ি ফেরার কথা এখনই ভাবতে পারছেন না উদ্বাস্তুদের কেউ। অনেক জায়গায় গলা সমান জল দাঁড়িয়ে আছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “পরিস্থিতি সরজমিনে খতিয়ে দেখতে আজ, রবিবার সেচমন্ত্রী বাসুসুবা ও বর্মনপাড়া ঘুরে দেখবেন। বাসুসুবায় কৃষি দফতরের ভূমি সংরক্ষণ দফতরের একটি বাঁধ ভেঙেছে। সেটা মেরামত করা যায় কিনা মন্ত্রী দেখবেন। বর্মনপাড়ায় রাস্তা ভেঙেছে। সেটা রক্ষার বিষয়েও কথা হবে।” শনিবার দিনভর তিস্তা বাঁধে আশ্রিতরা বাঁশ টিনের স্থায়ী চালাঘর তৈরির কাজ করেন। বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির সামনে লাইন দিয়ে বাঁধের মাটি কেটে ওই কাজ চলে। কেউ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেননি। উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান গৌতম দত্ত বলেন, “এই মুহূর্তে বাধা দেওয়া সম্ভব নয়। তবু প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে ওই সমস্যা নিয়ে কথা বলব। মূল বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সর্বনাশ হবে। তাই প্রয়োজনে মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।”
এ দিকে প্রশাসন এবং তৃণমূলের ত্রাণ শিবির থাকলেও বিভিন্ন সংস্থার তরফে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। শনিবার প্রয়াত চিত্র পরিচালক সুখেন দাসের কন্যা পিয়া দাসের নেতৃত্বে কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পানীয় জল, শিশু খাদ্য নিয়ে বর্মনপাড়ায় হাজির হয়। পিয়াদেবী বলেন, “এমন দুর্দশার কথা এলাকায় না এলে বুঝতে পারতাম না।” উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকেও এ দিন ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়। ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি সুভাষ বসু বলেন, “পানীয় জলের সমস্যা অনেকটাই মিটেছে। বিভিন্ন সংস্থা থেকেও ত্রাণ আসছে। সেচ মন্ত্রী এলে বর্মনপাড়ার পাশে ভেঙে যাওয়া কৃষি দফতরের বাঁধ মেরামতের আর্জি জানান হবে।” সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্ত্রী এ দিন গজলডোবায় দফতরের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করবেন। পরে বাসুসুবা এবং ময়নাগুড়ির বর্মনপাড়ায় যাবেন।