রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসনকে রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বালুরঘাটের আরএসপি বিধায়ক বিশ্বনাথ চৌধুরীর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে বলে গেলেন। মঙ্গলবার রাতে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বালুরঘাটে আসেন সেচমন্ত্রী। সে সময় বাম বিধায়ক বিশ্বনাথবাবু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে রাতে দেখা করেন সেচমন্ত্রী। পরে বুধবার প্রবীণ বাম বিধায়কের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে জেলাশাসক সহ আধিকারিকদের পরামর্শ দেন সেচমন্ত্রী রাজীববাবু।
বালুরঘাটের সেচ দফতরের বাংলোতে গিয়ে বিশ্বনাথবাবু তাঁর সঙ্গে রাত ১১টা নাগাদ দেখা করে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা ভাঙা সেতু, রাস্তা বাঁধের অংশে দ্রুত বেলি-ব্রিজ তৈরি করে যোগাযোগ স্থাপন করতে অনুরোধ করেন। পাশাপাশি বন্যায় আমন ধানের চাষ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ক্ষতি সামলাতে এখনই কৃষি দফতরকে দিয়ে উঁচু জায়গায় ধানের চারা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের বিলি করার ব্যবস্থা করতে বলেন। সেচমন্ত্রীকে পানীয় জলের অভাবের কথা জানিয়ে বিশ্বনাথবাবু বলেন, জল কমার সঙ্গেই ডায়েরিয়া দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা মাথায় রেখে অবিলম্বে হ্যালোজেন বড়ি ও ওষুধের ব্যবস্থা করে রাখা দরকার। সেচমন্ত্রী কৃষি সহ সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে বৈঠক করে ওই সমস্ত ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
এরপর বিশ্বনাথবাবু নদী বাঁধে কোথায় ফাটল ও বিধ্বস্তের খতিয়ান তুলে ধরলে বিভাগীয় অফিসারদের সেচমন্ত্রী তার তালিকা নিতে বলেন। সে সময় সেচমন্ত্রী রাজীববাবু প্রশাসনের আধিকারিকদের সামনে জেলাশাসককে বলেন, ‘‘বিশ্বনাথবাবু অনেক সিনিয়র লোক। অভিজ্ঞতাও রয়েছে।’’ ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে জেলশাসককে বলে যান সেচমন্ত্রী।
২০০৫ সালের পর এ বার বড় বন্যা দেখল জেলাবাসী। দীর্ঘ দিন বড় বন্যা না হওয়ায় দুর্বল নদীবাঁধ ও সেতু মেরামতির উদ্যোগ কিংবা প্রয়োজন দেখা দেয়নি। গত ১২ অগস্ট শনিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টির সঙ্গে নদীর জল বাড়তে থাকে। পরদিন ১৩ অগস্ট রবিবার বনিয়াদপুরে পুরসভার ভোট নিয়ে প্রশাসনিক ব্যস্ততায় দুর্যোগ ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে ভাবেননি কেউই। তার মোকবিলার কোনও প্রস্ততি ছিল না বলে অভিযোগ। প্লাবনের চার দিন পরেও বানভাসি এলাকায় খাবার ওষুধ পানীয় জল পৌঁছনো নিয়ে বন্যার্তদের মধ্যে অভিযোগ ক্ষোভে পরিণত হচ্ছে। তৃণমূলের খবর, এই অবস্থার অভিজ্ঞতা বিশ্বনাথবাবুর যে রয়েছে, তা জানেন বলেই তাঁর সঙ্গে কথা জানাতে সঙ্কুচিত হননি সেচমন্ত্রী।