সংশোধনাগার চত্বরে সভা শাসক দলের প্রভাবিত কারারক্ষী সংগঠনের।—নিজস্ব চিত্র।
জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের জেলারকে সরানোর জন্য চাপ দিল তৃণমূল প্রভাবিত বঙ্গীয় কারারক্ষী সমিতি। তাও আবার কার্যত সংশোধনাগারেই।
সোমবার জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের চত্বরে রীতিমতো মাইক বেঁধে সভা করে ওই হুমকি দেওয়া হয়। সে সময় জেলার রাজীব রঞ্জন পাশেই তাঁর দফতরে কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি জানিয়ে দেন, নিয়ম মেনেই সংশোধনাগারে বন্দিদের মোবাইল ব্যবহার ও যে কোনও রকম নেশা পুরোপুরি বন্ধ রাখা বাধ্যতামূলক। তাঁর দাবি, ‘‘বিধি মেনে সকলকে চলতে হবে। আমিও চলছি। সে জন্য কর্মীদের অনেকেই সে কাজে পূর্ণ সহযোগিতা করছেন। সেটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এর বেশি আমি আর কিছু বলছি না।’’
তবে শাসক দল প্রভাবিত কারারক্ষী সমিতি জেলারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন। যেমন, সংশোধনাগারের কর্মীদের দায়িত্ব মর্জি মাফিক বদল করা হচ্ছে। বন্দিদের কয়েক জনকে মারধর করা হচ্ছে। যদিও কর্মীদের অভিযোগ অস্বীকার করে জেলার বলেন, “সংশোধনাগারে বন্দিদের মারধরের কোনও ঘটনা ঘটেনি।” বরং কারাবিভাগের এক অফিসারের দাবি, সংশোধনাগারে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলা বন্ধ করায় এক বন্দি টেবিলের কাচে মাথা ঠুকে ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছেন।
এ দিন দুপুর নাগাদ ফ্লেক্স, ফেস্টুন লাগিয়ে সভার আয়োজন করে বঙ্গীয় কারারক্ষী সমিতি। সেখানে ওই সংগঠনের জলপাইগুড়ি শাখা ছাড়াও শিলিগুড়ি এবং কোচবিহারের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় যোগ দেন বিভিন্ন সরকারি দফতরের তৃণমূল প্রভাবিত কর্মী সংগঠনের নেতৃত্ব এবং জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রতিনিধিরা।
সভার শুরুতে বঙ্গীয় কারা রক্ষী সমিতির রাজ্য সম্পাদক রিপন সরকার বলেন, “সংশোধনাগারের কিছু কর্মচারী ও অফিসারের মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি।” এর পরেই জেলারের নাম উল্লেখ করে তাঁর সরাসরি আক্রমণ, “জেলারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। তাই তাঁকে বদলি হতে হবে।” বঙ্গীয় কারা রক্ষী সমিতির রাজ্য কমিটির উপদেষ্টা সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জেলারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। বন্দিদের উপরে নির্যাতন চলবে না।”
তবে সংশোধনাগারের কর্মীদের বদলি প্রসঙ্গে জেলার জানান, স্বাভাবিক নিয়মে কর্মীদের বদলি হতে হয়। এ ক্ষেত্রে তাঁর কিছু করার নেই। বঙ্গীয় কারা রক্ষী সমিতির অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, “মন্তব্য করব না।”