আলিপুরদুয়ারে বিরল গোরাল

ডূয়ার্সে প্রথম বার জনবহুল এলাকা থেকে ধরা পড়ল বিরল প্রজাতির হিমালয়ের গোরাল। রবিবার ভোর ছ’টা নাগাদ অনেকটা হরিণের মতো দেখতে এই প্রাণীটিকে দেখতে পান বঞ্চুকামারী গ্রামের বাসিন্দারা। বেশ কিছু লোক গোরালটিকে ধাওয়া করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৩৮
Share:

বিপন্ন: জনবসতিতে গোরাল। নিজস্ব চিত্র

ডূয়ার্সে প্রথম বার জনবহুল এলাকা থেকে ধরা পড়ল বিরল প্রজাতির হিমালয়ের গোরাল।

Advertisement

রবিবার ভোর ছ’টা নাগাদ অনেকটা হরিণের মতো দেখতে এই প্রাণীটিকে দেখতে পান বঞ্চুকামারী গ্রামের বাসিন্দারা। বেশ কিছু লোক গোরালটিকে ধাওয়া করেন। পরে কিছু বাসিন্দা গোরালটিকে ধরে বঞ্চুকামরী গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে ঢুকিয়ে তালা দিয়ে দেয়। পাহাড়ি পথে উঠতে অভ্যস্ত হওয়ায় তরতর করে সিঁড়ি বেয়ে গোরালটি তিন তলার সিঁড়ির ঘরে চলে যায়। পরে বনদফতরের কর্মীরা এসে তাকে নিয়ে যায়।

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডিএফডি কল্যাণ রায় জানান, হিমালযের গোরাল সাধারণত পাহাড়ে থাকে। মাঝে মধ্যে জঙ্গলে দেখা যায়। তবে জনবসতি এলাকায় গোরাল দেখা খুবই অস্বাভাবিক। তিনি জানান, প্রাণীটিকে উদ্ধার করে জয়ন্তীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

বনকর্মীরা জানান, বক্সায় বনকুকুরের সংখ্যা বাড়ছে। মাস দু’য়েক আগে জয়ন্তী রেঞ্জের জঙ্গলে বনকুকুরের আক্রমণে গোরাল প্রজাতির প্রাণী থর মারা যায়। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে বুনো কুকুরের ধাওয়া খেয়ে গোরালটি পাহাড় থেকে নেমে লোকালয়ে চলে এসেছে। পরিবেশবিদ অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘পাহাড়ে বৃষ্টি হলে অনেক সময় এমন প্রাণী নীচে নেমে এসে। তবে তারপরেও লোকালয়ে গোরালের দেখা মেলাটা খুবই বিরল।’’ গোরালটিকে বুনো কুকুর ধাওয়া করেছিল, এমন আশঙ্কাও তিনি উড়িয়ে দেননি। তিনিও জানান, গোরাল বিপন্ন প্রাণী।

আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত জানান, ষাট থেকে সত্তরের দশকে বক্সার জঙ্গলে গোরালের অস্তিত্ব ছিল। তবে লোকালয়ে গোরাল কোনও দিন দেখা যায়নি। এটি পাহাড়ে থাকে। দেখতে অনেকটা হরিণের মতো হলেও আদতে ছাগলের প্রজাতি। হিমালয়ের গোরাল পাহাড়ের উপরে তিন হাজার থেকে ন’হাজার ফুটের মধ্যেই সাধারণত থাকে। সাধারণত তারা ছোট ছোট দল বেঁধে থাকে। তবে বয়স হয়ে গেলে গোরাল কখনও কখনও একা হয়ে যায়।

বঞ্চুকামারীর বাসিন্দা মতিলাল কুজুর জানান, সকাল ছ’টা নাগাদ বাসিন্দারা ডিমা নদীর ধারে প্রাণীটিকে দেখতে পেয়ে ধাওয়া করে। পরে স্থানীয় বাসিন্দা মদন বর্মন, শংকর রায়রা কোনও মতে প্রাণীটিকে ধরে নিয়ে আসে। তবে প্রাণীটির কোনও শারীরিক ক্ষতি হয়নি বলেই বন দফতরের প্রাথমিক ভাবে ধারণা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন