Sujapur Blast

বিস্ফোরণের পিছনে কি ব্যবসার দ্বন্দ্ব

বৃহস্পতিবারের বিস্ফোরণে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। যেমন, ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও পুলিশ কেন মামলা রুজু করল না? সাধারণত এই ধরনের ঘটনায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবেই মামলা রুজু করে।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা 

সুজাপুর শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২০ ০৯:২২
Share:

মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন ইশা খান, মোস্তাক আলম-সহ কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র

প্রায় ১৫ কাঠা জমি। তার উপরেই প্লাস্টিকের কারখানা খুলে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবসা করছিলেন শ্যালক-জামাইবাবু আবু সায়েদ খান ও আমলু শেখ। বৃহস্পতিবারের সুজাপুরে বিস্ফোরণে প্রাণ হারান শ্যালক আবু সায়েদ খান। শুক্রবার দুপুরে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তের পর তাঁর দেহ বাড়িতে পৌঁছতেই ভিড় জমাতে শুরু করেন পাড়া-পড়শিরা।

Advertisement

বিস্ফোরণের রহস্য এ দিনও কাটেনি। এরই মধ্যে বিস্ফোরণের নেপথ্যে ব্যবসা সংক্রান্ত লেনদেন রয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। স্থানীয়দের দাবি, সুজাপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’ধারে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫০টি প্লাস্টিকের কারখানা রয়েছে। কারখানায় সব মিলিয়ে হাজারখানেক শ্রমিক কাজ করেন। প্লাস্টিকের ভাঙাচোরা সামগ্রী কারখানায় এনে কাটিং মেশিন দিয়ে টুকরো টুকরো করা হয়। কয়েকটি কারখানায় প্লাস্টিকের কাটা টুকরোগুলি মেশিনের সাহায্যে গলিয়ে ছোট ছোট দানা তৈরি করে মুর্শিদাবাদ, কলকাতা এবং ভিন্ রাজ্যেও পাঠানো হয়। প্লাস্টিকের কোটি কোটি টাকার কারবার চলে সুজাপুরে। সেই কারবার প্রায় আড়াই দশক ধরে চলছে।

বৃহস্পতিবারের বিস্ফোরণে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। যেমন, ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও পুলিশ কেন মামলা রুজু করল না? সাধারণত এই ধরনের ঘটনায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবেই মামলা রুজু করে। বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডলের দাবি, ‘‘ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ।’’ যদিও মালদহের এসপি অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্তে গাফিলতি প্রমাণ হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ পুলিশ সূত্রে বলা হয়, এর মধ্যেই এসটিএফ এসে দেখে গিয়েছে। এ রাতে কলকাতা থেকে ফরেন্সিক দলের সদস্যরাও পৌঁছন এবং নমুনা সংগ্রহ করেন। তা হলে তদন্তে গাফিলতির প্রশ্ন উঠছে কেন? মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি চলছে বলে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম নুর। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার মৃত এবং জখম পরিবারের পাশে রয়েছে। তাই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম দ্রুততার সঙ্গে সুজাপুরে ছুটে এসেছেন।”

Advertisement

স্থানীয়দের অনেকেই মনে করছেন, এর পিছনে ব্যবসায়িক গোলমাল থাকতে পারে। কারও কারও বক্তব্য, বিস্ফোরণের ঠিক আগে আমলু শেখ বেরিয়ে গিয়েছিলেন। কেন? আমলুর পরিবার দাবি করেছিল, তিনি দুর্ঘটনার সময় কারখানায় ছিলেন না। এ দিন দুপুরে আমলুর বাড়িতে গেলে দেখা যায় তালা তা বন্ধ ছিল। খোঁজ করেও তাঁর সঙ্গে দেখা করা যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সায়েদ খানেরা দুই ভাই-বোন। সায়েদের দিদির সঙ্গে আমলু শেখের বিয়ে হয়। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের এপার-ওপারে দু’জনের বাড়ি। বিস্ফোরণের সময় কারখানাতেই কাজ করছিলেন আবু সায়েদ। তিনি পুরো ঝলসে যান। তাঁকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মালদহ মেডিক্যালে। সেখান থেকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন