রেডব্যাঙ্ক চা বাগানে আজ লোক আদালত

আজ, রবিবার সকাল ১০ টায় ডুয়ার্সের বানারহাটের বন্ধ রেডব্যাঙ্ক চা বাগানের বাসিন্দাদের বিভিন্ন অভিযোগ নিস্পত্তির জন্য বসছে লোক আদালত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বানারহাট শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৬ ০১:৫২
Share:

বন্ধ রেডব্যাঙ্ক বাগান। ছবি: রাজকুমার মোদক।

আজ, রবিবার সকাল ১০ টায় ডুয়ার্সের বানারহাটের বন্ধ রেডব্যাঙ্ক চা বাগানের বাসিন্দাদের বিভিন্ন অভিযোগ নিস্পত্তির জন্য বসছে লোক আদালত।

Advertisement

এর জন্য কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের কাছে আবেদন করেছিল বাগানের শ্রমিকরা। হয়েছিল জনস্বার্থ মামলাও। বন্ধ বাগানের প্রফিডেন্ট ফান্ড, বিধবা ও বার্ধক্য ভাতা, মৃত্যুজনিত ক্ষতিপুরণ, একশো দিনের কাজ করে মজুরি না পাওয়া, শিশু শ্রম সহ প্রায় তিন’শ অভিযোগের শুনানি ও সমাধান হওয়ার কথা । রবিবারের লোক আদালতের দিকে তাকিয়ে আছে বাগানের শ্রমিকরা ।

লোক আদালতে উপস্থিত থাকবেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি প্রভাতকুমার দে, মলয়কুমার সেনগুপ্ত ও রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান সুনন্দা মুখোপাধ্যায়। এছাড়াও থাকবেন দার্জিলিং জেলা লিগ্যাল ফোরামের আইনজীবি, জলপাইগুড়ি আইনি পরিষেবার সদস্যরা। থাকতে বলা হয়েছে যে সব দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই দফতরগুলির আধিকারিকদেরও । গত জানুয়ারি মাসে গঙ্গারাম চা বাগান ও মার্চ মাসে পানিঘাটা চা বাগানে লোক আদালত বসাতে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হওয়ায় উপকৃত হয়েছিল শ্রমিকরা ।

Advertisement

দার্জিলিং জেলা লিগ্যাল ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার বলেন , “ রবিবার সমস্যা জর্জরিত বন্ধ রেডব্যাঙ্ক চা বাগানের শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য লোক আদালতে প্রায় তিন’শ অভিযোগের শুনানি ও তার সমাধান হবে। শ্রমিকদের বিভিন্ন অভিযোগে বিচারপতিদের সওয়ালের জবাব দেবেন বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা । ”

অভিযোগ, মালিকদের খামখেয়ালিপনায় রেডব্যাঙ্ক চা বাগান কয়েকবার খুলেও বন্ধ হয়। প্রথমবার বন্ধ হয় ২০০৩ সালে । লাগাতার সাত বছর বন্ধ থাকার পর ২০১০ সালে ফের চালু হয় । তারপরেও দু’বার বন্ধ ও দু’বার চালু হয় । শেষবার বন্ধ হয় ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে । তারপর থেকেই বাগানের ছায়া গাছ চুরি হতে থাকে । চুরি হতে থাকে বাংলোর দামি সামগ্রী, বিভিন্ন আবাসনের আসবার , দেওয়ালের ইট ও ঘরের চাল । ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে রেডব্যাঙ্ক চা বাগান অধিগ্রহণ করে রাজ্য সরকার। অধিগ্রহণের পরেও অবশ্য বাগানের শ্রমিকদের হাল একটুও ফেরেনি। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পাওয়া অনুদান দিয়ে শ্রমিকরা কোনও রকমে বেঁচে আছেন ।

শেষবার বাগান বন্ধ হওয়ার পর থেকে অপুষ্টি থাবা গেড়েছে বাগানে। বাগানের স্থায়ী ৮৮৬ জন শ্রমিক ছাড়াও কয়েক’শ ঠিকা শ্রমিক আছেন । কিন্তু বাগানের দুরবস্থায় অনেক শ্রমিক ভুটান বা কেরালা, দিল্লি , গুজরাটে কাজের খোঁজে চলে যান। লোক আদালত বসার খবরে খুশি বাগানের শ্রমিক-কর্মচারীরা । তবে শ্রমিকদের বক্তব্য , ‘‘আদালতের বিচার যাই হোক না কেন বিচারপতিদের বলব, যেভাবেই হোক বাগান খোলার ব্যবস্থা করতে । যাতে ভবিষ্যতে আমরা সন্তানদের নিয়ে কিছুটা সুখের দিন দেখতে পারি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন