ক্যাম্পাস কণ্টক

বারবার চুরি, তদন্তে আসেনি পুলিশ

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসেন নানা জায়গার তরুণ-তরুণীরা। কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে। ক্যাম্পাসের অন্দরমহলে কী কী কাঁটা রয়েছে, তার খোঁজ আনন্দবাজারে। তিন মাসে পরপর পাঁচটি চুরি। কোনটা গভীর রাতে, কোনদিন আবার দিনেদুপুরে তালা ভেঙে। প্রতি ক্ষেত্রেই জানানো হয়েছে পুলিশকে। অভিযুক্তরা ধরা পড়েনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৪৬
Share:

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচিলের দশা এমনই। — নিজস্ব চিত্র

তিন মাসে পরপর পাঁচটি চুরি। কোনটা গভীর রাতে, কোনদিন আবার দিনেদুপুরে তালা ভেঙে। প্রতি ক্ষেত্রেই জানানো হয়েছে পুলিশকে। অভিযুক্তরা ধরা পড়েনি। এমনকী, যেখান থেকে চুরি হয়েছে সেখানে পুলিশ তদন্তেও আসেনি বলে অভিযোগ। তাই নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে।

Advertisement

গত ডিসেম্বর মাসে রাতের বেলায় দোতলার শৌচাগারের তালা ভেঙে দামি সরঞ্জাম চুরি যায়। পুলিশে জানানোর পরেও অভিযুক্তরা ধরা পড়েনি। দিন কয়েক পরে দিনের বেলায় দরজা ভেঙে শৌচাগারের আস্ত বেসিনই খুলে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। ডিসেম্বর থেকে এমনভাবে অনন্ত পাঁচ বার চুরি হয়েছে। একবার অফিস ঘরের দরজা ভাঙার চেষ্টাও হয়েছে বলে অভিযোগ। কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা কলেজের বিভিন্ন অফিসে দামি কম্পিউটার, ল্যাপটপ-সহ লক্ষাধিক টাকার বৈদ্যুতিন সামগ্রী রয়েছে। আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান লিখিত ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পরিস্থিতি জানিয়েছেন। তারপরেও পুলিশ তদন্তেই আসেনি। আইন কলেজের এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘কোথাও চুরি বা অপরাধ হওয়ার পরে তদন্তে উর্দিধারীরা এলে দুষ্কৃতীরা ভয় পেয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে দুষ্কৃতীরা জানে এখানে চুরির অভিযোগ দায়ের হলে সক্রিয়তা দূরের কথা পুলিশ একবারও দেখতেও আসে না। তার ফলে চুরি চলছেই।’’

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস লাগোয়া একটি মেসবাড়ি থেকে তৃতীয় বর্ষের এক আইনের ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়। ছাত্রীর পরিবারের কয়েকজনের দাবি তাঁকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। সম্প্রতি এক যুবক ক্যাম্পাসে ঢুকে লাগাতার ছাত্রীকে হুমকি দিচ্ছিল বলে অভিযোগ। যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে রাজি না হওয়ায় ভয় দেখানো শুরু হতে থাকে বলে দাবি। ক্যাম্পাসে ঢুকে ছাত্রীকে ভয় দেখানোর অভিযোগ ওঠায় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। নিরাপত্তাহীনতার এমন অভিযোগের সঙ্গে আইন কলেজে পরপর চুরির ঘটনায় কেউ গ্রেফতার না হওয়া ক্যাম্পাসে ঢিলেঢালা নজরদারিকেই তুলে ধরেছে বলে দাবি। আইন বিভাগের তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান রথীন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযুক্তরা ধরা পড়েছে বলে শুনিনি। তাই নিশ্চিন্ত হওয়া যাচ্ছে না।’’ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও চিঠি পাঠিয়েছেন পুলিশকে। সেই চিঠি পৌঁছনোর পরেও মাসখানেক হতে চলেছে। পদক্ষেপ হয়নি বলেই অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের ক্ষোভ, পুলিশের ঢিলেঢালা মনোভাবের কারণেই দুষ্কৃতীরা বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকে লক্ষ্য বানিয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘গাফিলতি হওয়ার কথা নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা চলছে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন