মানিকচক এখনও প্লাবিত এলাকা। নিজস্ব চিত্র
মহকুমাশাসককে হেনস্তা ও জয়েন্ট বিডিওকে বেধড়ক মারধর করে বিডিও অফিসে যথেচ্ছ ভাঙচুর চালিয়ে গোডাউনের তালা ভেঙে ত্রাণ লুঠ করলেন বন্যা দুর্গতদের একাংশ। প্রশাসনের কর্তাদের মার খেতে দেখে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশও।
মালদহের রতুয়া-১ ব্লকে রবিবার দুপুরে দু’দফায় দুর্গতদের ভাঙচুর ও লুঠপাটের জেরে বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট, যান চলাচল। মারমুখী জনতাকে দেখে ভয়ে দফতর ছেড়ে আবাসনে গিয়ে আশ্রয় নেন বিডিও। আহত যুগ্ম বিডিওকে রতুয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও প্রাথমিক চিকিত্সার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় ত্রাণ লুঠের পর শনিবার হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ত্রাণ লুঠের ঘটনা ঘটে। ঘটনার জেরে বিব্রত ও আতঙ্কিত পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা।
চাঁচলের মহকুমাশাসক দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জয়েন্ট বিডিও মার খেলেন, পুলিশ আক্রান্ত হল। পুলিশ কোনওরকমে আমাকে উদ্ধার করে। আমরা দুর্গতদের ত্রাণ দেব নাকি এই সব পরিস্থিতি সামলাব।’’
প্রশাসন জানায়, এ দিন ত্রাণ নিতে ব্লকের সামনে হাজির হন কয়েকটি অঞ্চলের দুর্গতরা। ওই সময় ব্লকে মহকুমাশাসক ছাড়াও উত্তর মালদহের সাংসদ ছিলেন। ত্রাণ বিলি নিয়ে সর্বদলীয়ভাবে আলোচনার পর সাংসদ বেরিয়ে যান। খানিক বাদে মহকুমাশাসক বের হতেই কেন ত্রাণ দিতে দেরি হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলে তাকে গাড়ি টেনে নামানোর চেষ্টা হয়। তা দেখে জয়েন্ট বিডিও এবিএ মহম্মদ মুসফেকুস সালেহিন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁর উপরে চড়াও হয়ে বেধড়ক কিল, চড়, ঘুসি মারতে শুরু করেন দুর্গতরা। পুলিশ মহকুমাশাসক ও জয়েন্ট বিডিওকে কোনওক্রমে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। তারপেরই বিডিও অফিসে ঢুকে ভাঙচুর চালানো হয়। বাধা দেওয়ায় আক্রান্ত হন পুলিশকর্মীদের একাংশ। পুলিশ সেই সময় পরিস্থিতি সামাল দিলেও ফের আধঘন্টা বাদে দ্বিতীয় দফায় বিডিও অফিসে ভাঙচুর চালিয়ে গোডাউনের তালা ভেঙে ত্রান লুঠ করেন দুর্গতরা বলে অভিযোগ। পরে এসডিপিও বিরাট পুলিশ বাহিনী নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘লুঠের জন্যই দুর্গতদের মধ্যে থাকা কারও উস্কানিতেই এমনটা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’’ জয়েন্ট বিডিও বলেন, মহকুমাশাসককে হেনস্তা হতে দেখে বাধা দিতেই ওরা আমার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সাংসদ বলেন, দুর্যোগ আচমকা হওয়ার পাশাপাশি প্রচুর এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ত্রান দিতে দেরী হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন ত্রান দিচ্ছে না তা বলব না।