পুলিশ সক্রিয় হোক, চাইছে শিলিগুড়ি

রাত ৯টা বাজলেই শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় নেশার আসর বসছে। ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোথাও চলছে দেদার গাঁজা, ভাঙ, হেরোইনও। আবার কোনও জায়গায় শুধুই মদ। শহরের কোনও মাঠে একটু আড়াল খুঁজে বোতল সাজিয়ে বসার ছবি চোখে পড়ছে বাসিন্দাদের।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৭ ০২:৩০
Share:

উদ্বিগ্ন: নার্সিংহোমের সামনে রুদ্রনাথ ভট্টচার্য। —নিজস্ব চিত্র।

রাত ৯টা বাজলেই শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় নেশার আসর বসছে। ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোথাও চলছে দেদার গাঁজা, ভাঙ, হেরোইনও। আবার কোনও জায়গায় শুধুই মদ। শহরের কোনও মাঠে একটু আড়াল খুঁজে বোতল সাজিয়ে বসার ছবি চোখে পড়ছে বাসিন্দাদের। কোনও মাঠে আবার ৫-১০টি মোটরবাইক গোল করে দাঁড় করিয়ে সেখানেই চলছে মদ-গাঁজার মৌতাত। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলেই আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের একাধিক অফিসার জানান, থানা পর্যায়ে নজরদারি বাড়িয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

Advertisement

শিলিগুড়ির একাধিক নাগরিক সংগঠন অবশ্য দাবি করছে, নেশার আসর বসছে খবর পেয়েও পুলিশের একাংশ ব্যবস্থা নিতে চান না। যেখানে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিলেই নেশার কারবারিরা পালাতে বাধ্য, সেখানে পুলিশের একাংশ কী কারণে হাত গুটিয়ে থাকেন, তা নিয়েও তদন্তের দাবি তুলেছে নাগরিক সংগঠনগুলি। শিলিগুড়ির একটি নাগরিক সংগঠনের পক্ষে রতন বণিক বলেন, ‘‘এ বার প্রথমে পুলিশ কমিশনারকে বিষয়টি জানাব। তাতে কাজ না হলে উত্তরবঙ্গের এডিজি তথা আইজি-র কাছে যাব। তাতেও যথেচ্ছ নেশার আসর বন্ধ না হলে নবান্নের দ্বারস্থ হব।’’

ক্ষোভ-উদ্বেগ ছড়িয়েছে শিলিগুড়ির পাড়ায়-পাড়ায়। কারণ, বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, প্রধাননগরে মহানন্দা নদীর ধারে বেশ কয়েকটি এলাকায় সন্ধ্যা নামলে চলছে মদ-গাঁজার কারবার। শিলিগুড়ির মহানন্দা সেতুর পাশের গলির ধারেও কমবেশি রোজই চলে নেশার কারবার। সেখানে মদ্যপানের দৃশ্য চোখে পড়েছে অনেক পথচারীরই। হিলকার্ট রোডের ধারে একাধিক মদের দোকানের সামনে দাঁড়িয়েই চলছে নেশাভাঙ। শিলিগুড়ির মেয়র পারিষদ শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘নানা এলাকা থেকে একই অভিযোগ পাচ্ছি। পুলিশ একটু নজরদারি বাড়ালে ভাল। না হলে যে কোনও দিন বড় ধরনের গোলমালের আশঙ্কা রয়েছে।’’ শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক শীর্ষ কর্তা জানান, প্রয়োজনে বিশেষ সেল গড়ে অভিযান চালানো হবে।

Advertisement

তবু উদ্বেগ বাড়ছে শিলিগুড়ির। বৃহত্তর শিলিগুড়ি নাগরিক সমিতির মুখপাত্র দুর্গা সাহা জানান, শহরে যত্রতত্র নেশার আসর রুখতে প্রশাসন যাতে সক্রিয় হয়, সে দিকে নেতা-মন্ত্রীদেরও নজর দিতে হবে। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে শহরে পরিবেশ ভাল করার চেষ্টা না হলে শিলিগুড়ির আইনশৃঙ্খলার আরও অবনতি হবে। এতে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়াতে পারে বলে নাগরিক সংগঠনগুলির অনেকেরই আশঙ্কা।

শিলিগুড়ি আদালতের আইনজীবী অখিল বিশ্বাস বলেন, ‘‘একটা শহর আয়তনে, জনসংখ্যা বাড়ছে। সেখানে দুষ্টচক্রও বাড়বে। পুলিশ-প্রশাসন যদি অতি-সক্রিয় না থাকে তা হলে দুষ্টচক্রের দৌরাত্ম্যে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন