বিধি ভেঙে উড়ালপুলে পুলিশের গাড়ি, জখম ১

বিধি ভেঙে একমুখী উড়ালপুলে গাড়ি নিয়ে ঢুকে বাইক আরোহীকে ধাক্কা মেরে জখম করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের গাড়ির বিরুদ্ধে। সোমবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি থানার দিক থেকে উড়ালপুলের ওঠার ‘ওয়ান ওয়ে’-তে। গুরুতর জখম ওই বাইক আরোহীকে ওই গাড়িতেই তড়িঘড়ি প্রথমে থানায় ও পরে শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশই।

Advertisement

সংগ্রাম সিংহ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৫ ০৩:২৫
Share:

(বাঁদিকে) জখম গৌর বর্মন। ক্ষতিগ্রস্ত এসিপির গাড়ি।—নিজস্ব চিত্র।

বিধি ভেঙে একমুখী উড়ালপুলে গাড়ি নিয়ে ঢুকে বাইক আরোহীকে ধাক্কা মেরে জখম করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের গাড়ির বিরুদ্ধে। সোমবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি থানার দিক থেকে উড়ালপুলের ওঠার ‘ওয়ান ওয়ে’-তে। গুরুতর জখম ওই বাইক আরোহীকে ওই গাড়িতেই তড়িঘড়ি প্রথমে থানায় ও পরে শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশই।

Advertisement

জখম ব্যক্তির বাঁ হাতে মাথায় ও বুকে আঘাত লেগেছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা বলেন, “গাড়িটি এসিপি (ইবি) ব্যবহার করেন। তবে দোষী প্রমাণিত হলে চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এসিপির বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই বলে তিনি জানান। তবে ডিসি ট্রাফিককে এ বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

ডিসি (ট্রাফিক) শ্যাম সিংহ বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। গোটা ঘটনার রিপোর্টে চেয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই চালকের কোনও গাফিলতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” তবে গাড়িতে থাকা এসিপি কেন একমুখি উড়ালপুলে উল্টোদিক থেকে যাওয়ার সময়ে নিষেধ করেননি পুলিশ মহলে সেই প্রশ্ন উঠেছে। পরে জখমকে হাসপাতাল থেকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে ওই ব্যক্তির নাম গৌর বর্মন। তাঁর বাড়ি শিলিগুড়ির চম্পাসারি এলাকায়। তিনি একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী। প্রত্যক্ষদর্শীদের মত অনুযায়ী জানা গিয়েছে, এদিন ওই ব্যক্তি স্টেশন ফিডার রোড থেকে বাইক নিয়ে উড়ালপুলের দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় উড়ালপুল থেকে ওয়ান ওয়েতে বিধি ভেঙে নেমে আসছিল শিলিগুড়ি পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের এসিপি আলি নূরের গাড়িটি। ওই সময় গাড়িতে ছিলেন এসিপি নিজেই। তিনি নিজে কী করে ওয়ান ওয়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে নামছিলেন প্রশ্ন তুলছেন উপস্থিত পথচারীরা। যদিও ওই এসিপি নিজে অবশ্য রং রুটে গাড়ি ঢুকিয়েছিলেন বলে স্বীকার করেননি। তিনি ওই বাইক আরোহীর উপরেই দোষ চাপিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা সঠিক পথেই যাচ্ছিলাম। ওই বাইক আরোহী ওভারটেক করায় দুর্ঘটনা ঘটে।”

বাইক ও গাড়ির সংঘর্ষের চিহ্ন দেখে অবশ্য ওভারটেক করার কোনও প্রমাণ মেলেনি বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকের দাবি। বাইকের সামনের অংশ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসিপির গাড়ি ডাব্লিউবি-৭৪এসি ৯৮৫১ গাড়িটির সামনের বাঁদিকের হেডলাইড সহ কিছুটা অংশ দুমড়ে যায়। বাঁ দিকের উইন্ডস্ক্রিনও সংঘর্ষের তীব্রতায় ফেটে যায়। যদিও জখম ব্যক্তি নিজে পুলিশের দাবি মানতে চনি। তিন বলেন, “আমি স্টেশন ফিডার রোড থেকে ওয়ান ওয়ে দিয়ে যাচ্ছিলাম। সামনে থেকে গাড়ি আসার কথা নয় তাই জোরেই চালাচ্ছিলাম। হঠাত্‌ সামনে থেকে গাড়িটিও জোরে এসে আমার বাইকে ধাক্কা মারে।”

তবে জখম গৌরের পরিবারের পক্ষ থেকে রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই জানাচ্ছেন, পুলিশের গাড়ি বলেই এইভাবে ওয়ান ওয়েতে নেমে এসেছে। সাধারণ বাসিন্দা হলে সঙ্গে সঙ্গে আটকে মোটা টাকা জরিমানা করা হয়। “পুলিশের জন্য আলাদা আইন নাকি?” প্রশ্ন তুলেছেন একজন। গৌরের সহকর্মীরা অনেকেই ছুটে এসেছিলেন দুর্ঘটনার খবর শুনে। তাঁদেরই একজন বলেন, “একটি শাখার চেক নিয়ে ব্যাঙ্কের অন্য একটি শাখায় যাচ্ছিলেন গৌর। কিছুক্ষণ পরেই কেউ গৌরের মোবাইল থেকে ফোন করে জানায়, উড়ালপুলের কাছে সে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে। আমরা কয়েকজন তখনই ছুটে যাই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন