থমকে: রাস্তা খুললেও যানজট সেবকে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
ধস সরিয়ে রাস্তা খুললেও প্রবল যানজটে রবিবার বিকেলের পর প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ল ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। এর জেরে সিকিম, কালিম্পঙের সঙ্গে ডুয়ার্সে যানবাহন চলাচল শুরু করলেও এক কিলোমিটার পার হতে চালকদের প্রায় ঘণ্টাখানেক লেগেছে। গভীর রাত অবধি পরিস্থিতি একই ছিল।
শুক্রবার সেবক কালীবাড়ি, শ্বেতিঝোরা, ২৯ মাইল, মংপং-সহ অন্তত ২০টি জায়গায় ছোটবড় ধস নামে। টানা বৃষ্টিতে কাদা মাটির সঙ্গে পাথর পড়ে রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। শনিবার সকাল থেকে রাস্তা খোলার কাজ শুরু হয়। মাটি-পাথর, গাছ সরানো হলেও বারবার বৃষ্টি নামায় পরিস্থিতি সামলানো পূর্ত দফতরের পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না। রবিবার সকাল থেকে অবশ্য ঝলমলে আকাশে ধস সরানোর কাজ দ্রুত গতিতে শুরু হয়। বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়। একমুখী গাড়ি চলাচল শুরু হয়। বিকেল ৪টের পর মংপু হয়ে ডুয়ার্সের দিকে গাড়ির চলাচল শুরু হয়। দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টায় জাতীয় সড়কের একাধিক অংশে গাড়ি, মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়ায় যানজট তৈরি হয়। প্রথম দিকে পুলিশের তেমন দেখা না মিললেও পরে সেবক ফাঁড়ির পুলিশ কর্মীরা গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ শুরু করেন। রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘রাস্তা খুলেছে শুনেছি। যান নিয়ন্ত্রণে আরেকটু নজর দেওয়ার জন্য পুলিশকে বলব।’’
বিশ্বকর্মা পুজোর আগে যানজটে চিন্তা বেড়েছে চালকদের। এ দিন বিকেল থেকে বহু গাড়িতে বিশ্বকর্মা ঠাকুরের মূর্তি পাহাড়ে যেতে দেখা গিয়েছে। গ্যাংটকের ছোট গাড়ির চালক পেমা শেরপা, আলগাড়ার থেন্ডু ভুটিয়ারা রাতের মধ্যে শিলিগুড়ি থেকে মূর্তি নিয়ে পৌঁছতে রওনা দেন। তাঁরা বলছিলেন, ‘‘পৌঁছতেই হবে। প্যান্ডেল তৈরি। সকালে পুজো হবে।’’ শিলিগুড়ির হায়দারপাড়া থেকে বিশ্বকর্মা পুজোর বরাতের মিষ্টি নিয়ে সেবকে বিকালে তিন ঘণ্টা যানজটে আটকে ছিলেন বিক্রম সর্দার। তাঁর কথায়, ‘‘সময়মত মিষ্টি পৌঁছতে না পারলে তো টাকা পাব কি না জানি না।’’ সিকিম থেকে বহু পর্যটককেও এ দিন নেমে আসতে দেখা গিয়েছে।
ধসে শনিবার ভোর থেকেই ডুয়ার্সের সঙ্গে সেবকের যোগাযোগ একেবারে বন্ধ হয়ে পড়েছিল। দু’দিন বাধ্য হয়ে গজলডোবার পথেই ডুয়ার্সের সঙ্গে যোগাযোগ চলেছে। ডুয়ার্সের বাতাবাড়ি চা বাগানের বাসিন্দা অরিন্দম চৌধুরী শিলিগুড়িতে কর্মরত। সপ্তাহের শেষে বাইকে করে গজলডোবার পথ ধরেই বাড়ি ফিরতে বাধ্য হন তিনি। বিশ্বকর্মা পুজোর আগে উত্তরের প্রধান শহর শিলিগুড়ির সঙ্গে যোগাযোগ দু’দিন ব্যাহত হওয়ার সমস্যায় পড়েন ব্যবসায়ীরা।