rubia

অর্থাভাবে সংশয়ে রুবিয়ার বিদেশযাত্রা

শহরের ফুটপাতে জুতোর দোকান রয়েছে রুবিয়ার বাবা গফুর আলির।

Advertisement

বিল্টু সূত্রধর

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:৩১
Share:

রুবিয়া খাতুন। নিজস্ব চিত্র

ছোট থেকেই পছন্দ ছিল যোগব্যায়াম। সেটাই কখন যে নেশা হয়ে গিয়েছে তা বুঝতে পারেননি রুবিয়া। পড়াশোনার পাশাপাশি পুরোদমে চালিয়ে গিয়েছেন যোগ অভ্যাস। তারই ফল মিলল তাঁর। দার্জিলিঙে একটি যোগ প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়ার সুবাদে আন্তজার্তিক স্তরের প্রতিযোগিতার সুযোগ পেলেন জলপাইগুড়ি শহরের মেয়ে রুবিয়া খাতুন। তাইল্যান্ডে হবে সেই প্রতিযোগিতা। সুযোগ পেলেও বাদ সেধেছে পরিবারের আর্থিক অবস্থা।

Advertisement

শহরের ফুটপাতে জুতোর দোকান রয়েছে রুবিয়ার বাবা গফুর আলির। সেই দোকানের আয়েই চলে সংসার। শহরের মার্চেন্ট রোডের একটি ছোট ঘরে বাবা, মা ও ভাই-বোনের সঙ্গে থাকেন রুবিয়া। সওদাগরপট্টি প্রাইমারি স্কুলের ছাত্রী রুবিয়া সোনালি গার্লস উচ্চমাধ্যমিক থেকে পাশ করে ভর্তি হয়েছিলেন আনন্দচন্দ্র কলেজে। তারপরে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতোকোত্তর সম্পূর্ণ করেন। এখন গৃহশিক্ষকতা করে পরিবারকে সাহায্য করেন রুবিয়া। পরিবারের যা আর্থিক অবস্থা তাতে তাইল্যান্ডে প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়া প্রায় অনিশ্চিত বলে মনে করছেন রুবিয়া।

স্কুলে থাকতেই যোগব্যায়ামের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছিল তাঁর। স্কুলের শিক্ষিকার কাছেই যোগব্যায়ামে হাতেখড়ি তাঁর। বছর দেড়েক ধরে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন বাবলা তন্ত্রের কাছে। ছাত্রীর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত বাবলা বলেন, ‘‘খুবই ভাল লাগছে। তবে ওঁর পারিবারে আর্থিক সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি জেলা ক্রীড়া দফতরে জানিয়েছি।’’

Advertisement

কিছুদিন আগে দার্জিলিংয়ে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়ান যোগা স্পোর্টস কনফেডারেশন আয়োজিত অল ইন্ডিয়া দার্জিলিং কাপ ২০১৯-এ প্রথম হয়েছেন রুবিয়া। এরপরেই তাইল্যান্ডে যোগব্যায়াম প্রতিযোগিতায় ডাক পান তিনি। ২৫ এপ্রিল হবে প্রতিযোগিতা। সেখানে থাকা-খাওয়া ও পোশাক বাবদ খরচ হবে প্রায় ৬৫ হাজার টাকা। পরিবারের যা আয় তাতে ওই টাকা খরচ করা সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছেন রুবিয়া। তিনি বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসন ও সকলে সাহায্য করলে আমার স্বপ্নপূরণ হবে। বিদেশে গিয়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে পারব এটা আমার কাছে স্বপ্ন।’’ সীমিত ক্ষমতার মধ্যেই মেয়ের পড়াশোনা ও যোগব্যায়াম প্রশিক্ষণে বরাবর পাশে থেকেছেন গফুর। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ের স্বপ্ন কী ভাবে পূরণ করব জানি না।’’ রুবিয়ার মা মুন্না খাতুন বলেন, ‘‘সকলে যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। তাহলে মেয়েকে বিদেশে পাঠাতে পারব।’’

জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ির মেয়ে বিদেশে যোগ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে, খুবই আনন্দের বিষয়। আর্থিক সাহায্যের বিষয়টি দেখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন