—ফাইল চিত্র।
চাকরি পাওয়ার পর সাত মাস কেটে গিয়েছে। নিয়োগপত্র নিয়ে বার বার স্কুলের দরজা থেকে ঘুরে গিয়েছেন বেগম সালমা পারভিন। অভিযোগ, তৃণমূলেরই একটি অংশ স্কুলে যোগ দিতে বাধা দিচ্ছিল। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হন তিনি। শেষপর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের চারদিনের মাথায় স্কুলে শিক্ষকতার কাজে যোগ দিলেন ওই মহিলা।
মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা ওই মহিলাকে সঙ্গে নিয়েই স্কুলে পৌঁছন। তাঁদের উপস্থিতিতেই স্কুলে কাজে যোগ দেন তিনি। ঘটনাটি কোচবিহার সুটকাবাড়ি একরামিয়া হাইমাদ্রাসার।
মন্ত্রী বলেন, “সাত মাস ধরে তাঁকে কাজে যোগ দিতে দেওয়া হচ্ছিল না বলে অভিযোগ করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাই আজ আমরা তাঁকে কাজে যোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করি। এখন থেকে আর কোনও অসুবিধে হওয়ার কথা নয়।” জেলাশাসক বলেন, “নিয়ম মেনেই উনি কাজে যোগ দিয়েছেন।” এ দিন স্কুলে যোগ দিতে পেরে খুশি সালমাও। তিনি বলেন, “সাত মাস ধরে ঘুরছি। মাদ্রাসা কমিশন, সংখ্যালঘু কমিশনের চিঠি এনেও লাভ হয়নি। তাই মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে যাই। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।”
কোচবিহার শহরের কাছেই সুটকাবাড়ি একরামিয়া হাইমাদ্রাসায় গত বছরের জুন মাসে চারজনকে হাইমাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু, ওই সময় স্কুল কর্তৃপক্ষ কাউকেই স্কুলে কাজে যোগ দিতে রাজি হননি। তাঁদের যুক্তি ছিল, নিয়োগ মাদ্রাসা কমিশন না স্কুল পরিচালন সমিতির তরফে হবে তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা চলছে। সে জন্যেই কাউকে তাঁরা যোগ দেওয়াতে পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় বাকি তিনজনকে অন্য মাদ্রাসার নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁকে ওই স্কুলেই কেন যোগ দিতে দেওয়া হবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সালমা।
সালমা জানান, ২৬ জুন তিনি নিয়োগপত্র পেয়েছেন। এর পরে দফায় দফায় নানা জায়গায় গিয়েছেন তিনি। তাতে কাজ না হওয়ায় গত ১৭ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়ের দফতরে যান। সেখান থেকেই লিখিত ভাবে বিষয়টি উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
অভিযোগ, ওই স্কুলের পরিচালন সমিতি তৃণমূলের দখলে রয়েছে। তাঁরাই যোগ দিতে বাধা দিয়েছেন। এমনকি টাকা-পয়সার বিনিময়ে যোগ দিতে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য পুরো অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা সুটকাবাড়ির তৃণমূল নেতা সিরাজুল হক বলেন, “আমি বাইরে রয়েছি। তবে আদালতে মামলা চলার জন্যে ওই নিয়োগ আটকে রয়েছে। স্কুলে গিয়ে বিষয়টি দেখব।” স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খুরশিদ আলম শেখ বলেন, “মামলার জন্য এতদিন নিয়োগ করা যায়নি। এ দিন মন্ত্রী ও জেলাশাসকের নির্দেশে এবং তাঁদের উপস্থিতিতেই উনি কাজে যোগ দেন।”