অবশেষে রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নিলেন ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সন্দীপ বিশ্বাস। ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নিলেন ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তথা আইএনটিটিইউসি-র উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অরিন্দম সরকার।
মঙ্গলবার দুপুরে পুরভবনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচন এবং তাঁদের শপথগ্রহণ হয়। এ দিনের বৈঠকে তৃণমূলের ২৪ জন কাউন্সিলর সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে সন্দীপবাবুকে চেয়ারম্যান ও অরিন্দমবাবুকে ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করেন।
সন্দীপবাবু ও অরিন্দমবাবুর দাবি, দলমত নির্বিশেষে পুরসভার ২৭ জন কাউন্সিলর ঐক্যবদ্ধ ভাবে সমস্ত ওয়ার্ড কমিটির প্রস্তাব ও পরামর্শ মেনে শহরের উন্নয়নের কাজ করবেন। শহরের বাড়ি বাড়ি বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের কাজ শেষ করা ও যানজট সমস্যার সমাধানের কাজ শেষ করাই আপাতত প্রধান লক্ষ্য।
নির্বাচনে ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৪টি ওয়ার্ডে তৃণমূল জয়ী হয়ে কংগ্রেসের দুর্গ ভেঙে দেয়। কংগ্রেস দু’টি ও বিজেপি একটি আসন দখল করে। ৫ জুন পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচনের প্রথম বৈঠকে তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম অধিকারী একটি খাম খুলে চিঠি বার করে চেয়ারম্যান হিসেবে সন্দীপবাবুর নাম প্রস্তাব করেছিলেন। ওই চিঠিতে শুভেন্দুবাবুর সই ছিল বলে দাবি করা হয়েছে। পুরসভা নির্বাচনের মুখে জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তের ডান হাত বলে পরিচিত সন্দীপবাবু তৃণমূলে যোগ দেন। অরিন্দমবাবুর অনুগামী বেশিরভাগ কাউন্সিলর তাই সন্দীপবাবুকে চেয়ারম্যান হিসেবে মেনে নিতে পারেননি। তাঁরা চেয়ারম্যান হিসেবে পাল্টা অরিন্দমবাবুর নাম প্রস্তাব করেন।
সন্দীপবাবু ও অরিন্দমবাবু দু’জনেই চেয়ারম্যান পদের দাবিতে অনড় থাকায় শুরু হয় ভোটাভুটি। কিন্তু ভোটাভুটি চলাকালীন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির নির্দেশে চেয়ারম্যান নির্বাচন স্থগিত করে দেন তৃণমূল কাউন্সিলররা। ফলে চেয়ারম্যান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে করে জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের বিরোধী নেতা বলে পরিচিত অরিন্দমবাবুর গোষ্ঠীর সঙ্গে অমলবাবুর অনুগামী সন্দীপবাবুর গোষ্ঠীর বিবাদ প্রকাশ্যে এসে পড়ে। ১০ জুন ২৪ জন কাউন্সিলরের সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রতবাবু ও দলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। ওই বৈঠকেই সন্দীপবাবুকে চেয়ারম্যান ও অরিন্দমবাবুকে ভাইস চেয়ারম্যান মেনে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।