গবেষণাগার নিয়ে দুর্ভোগ

রায়গঞ্জের শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ বিদ্যাভবনে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের তিনটি গবেষণাগারে দীর্ঘ দিন ধরে এ ভাবেই চলছে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস। অবিলম্বে অতিরিক্ত গবেষণাগার তৈরি করা না হলে পরীক্ষানিরিক্ষার সময়ে যে কোনও সময়ে পড়ুয়াদের শরীরে রাসায়নিক পড়ে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৭ ০২:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

গবেষণাগারে একসঙ্গে ২০ জন পড়ুয়ার প্র্যাক্টিকাল ক্লাস করার মতো পরিকাঠামো রয়েছে। ফলে সঙ্কীর্ণ গবেষণাগারে কখনও ৩৫, কখনও ৪০ জন পড়ুয়া পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সেই ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে। ভিড়, ঠেলাঠেলির চাপে মাঝেমধ্যেই তরল রাসায়নিক পড়ে পড়ুয়াদের পোশাক নষ্ট হচ্ছে। হামেশাই টেবিল থেকে মাটিতে আছড়ে পড়ে ভেঙে যাচ্ছে গবেষণাগারের বহুমূল্য বিভিন্ন কাচের জার ও পাত্র।

Advertisement

রায়গঞ্জের শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ বিদ্যাভবনে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের তিনটি গবেষণাগারে দীর্ঘ দিন ধরে এ ভাবেই চলছে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস। অবিলম্বে অতিরিক্ত গবেষণাগার তৈরি করা না হলে পরীক্ষানিরিক্ষার সময়ে যে কোনও সময়ে পড়ুয়াদের শরীরে রাসায়নিক পড়ে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্কুলের প্রধানশিক্ষক নীলমাধব নন্দীর দাবি, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অতিরিক্ত গবেষণাগার তৈরির জন্য শিক্ষা দফতরের কাছে বরাদ্দ চেয়েও মেলেনি। পড়ুয়ারা ঝুঁকি নিয়েই প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে। তিনি জানান, গবেষণাগারে পরীক্ষানিরিক্ষার সময়ে গত এক বছরে তরল রাসায়নিক পড়ে ৩০ জন পড়ুয়ার পোশাক নষ্ট হয়েছে। ২৫টিরও বেশি বহুমূল্য কাচের জার ও পাত্র টেবিল থেকে মাটিতে আছড়ে পড়ে ভেঙে গিয়েছে।

Advertisement

উত্তর দিনাজপুরের বিদ্যালয় পরিদর্শক নারায়ণচন্দ্র সরকারের বক্তব্য, ‘‘আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’’

উল্লেখ্য, ওই স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য গত ৩০ মে রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত তাঁর বিধায়ক তহবিল থেকে ১১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৪৮৭ টাকা বরাদ্দ করেছেন। ওই টাকায় তিনটি বড় গবেষণাগার তৈরি করা যায় কিনা সেই বিষয়ে আলোচনা চলছে বলে দাবি করেছেন স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি দেবব্রত সরকার।

ওই স্কুলে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ২০০ জন পড়ুয়া রয়েছে। স্কুল চালু থাকাকালীন তারা সকলেই নিয়মিত পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও বায়োলজি বিষয়ের পড়ুয়ারা তিনটি গবেষণাগারে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করে। পড়ুয়াদের চাপ ও সঠিক সময়ে পাঠ্যক্রম শেষ করতে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রতি দফায় তিনটি গবেষণাগারে ৩৫ থেকে ৪০ জনের কম পড়ুয়াকে নিয়ে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করাতে পারেন না। অথচ ওই গবেষণাগারগুলিতে ২০ জন পড়ুয়ার দাঁড়িয়ে বিভিন্ন পরীক্ষানিরিক্ষার মাধ্যমে সেই ক্লাস করার পরিকাঠামো রয়েছে।

দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া সংহিতা ভৌমিক, গীতাঞ্জলি সরকার, মুসেলিন নাদিম জৈনের বক্তব্য, ‘‘তিনটি গবেষণাগারেই অ্যাসিড ও শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক ৫০টিরও বেশি তরল রাসায়নিক রয়েছে। তাই পড়ুয়াদের ঝুঁকি এড়াতে ও সুষ্ঠু ভাবে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস চালু রাখার স্বার্থে দ্রুত অতিরিক্ত গবেষণাগার তৈরির কাজ শুরু করা উচিত স্কুল কর্তৃপক্ষের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন