সামাল: ডাক্তারের গাড়ি ঢুকছে সংশোধনাগারে। নিজস্ব চিত্র
কারারক্ষীদের লোহার রড ও গাছের ডাল দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠল একাংশ বিচারাধীন বন্দিদের বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মালদহ জেলা সংশোধনাগার। আক্রান্ত কারারক্ষীরা মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
জেল সূত্রের খবর, এদিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ডিউটি করছিলেন অজিত ঘোষ নামে এক কারারক্ষী। অভিযোগ, দুই বিচারাধীন বন্দি ওই কর্মীকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ শুরু করে। রেগে গিয়ে সংশোধনাগারের মধ্যেই জলের লোহার পাইপ নিয়ে চড়াও হন ওই দুই কর্মী। এরপর পরিস্থিতি আরও ঘোরাল হয়ে ওঠে। অন্য বন্দিরা গাছের ডাল ভেঙে এবং মেঝে থেকে ইট তুলে অজিতকে মারতে শুরু করে। অজিতকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন সৌরভ সাহা এবং ফকির মাহারা নামে আরও দুই কারারক্ষী। আহতদের মধ্যে সৌরভের আঘাত গুরুতর। তাঁর মাথায় আঘাত রয়েছে। ঘটনা কেন্দ্র করে হইচই পড়ে যায় জেল-চত্বর জুড়ে। অন্য কারারক্ষী, আধিকারিকেরা গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। ঘটনাস্থলে যায় ইংরেজবাজার থানার বিশাল পুলিশবাহিনীও। আক্রান্ত অজিত পরে বলেন, ‘‘আচমকা কয়েকজন বন্দি আমাকে উদ্দেশ্যে করে গালিগালাজ শুরু করে। আমি এগিয়ে যেতেই শুরু হয় হামলা। জেলে কড়া প্রহরা শুরু হওয়াতেই এই হামলা বলে দাবি করেন তিনি। অভিযোগ, সংশোধনাগারে সদ্য আসা বন্দিদের কাছে তোলা চাওয়া থেকে শুরু করে মাদক কারবারের একটি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সেই চক্রে যুক্ত কালিয়াচকের নওদা যদুপুরের কুখ্যাত দুষ্কৃতী বকুল শেখ নামে এক বন্দি। তারই নামে এ দিনের ঘটনায় মদতের অভিযোগ রয়েছে। এদিনই জেল কর্তৃপক্ষ দুই বিচারাধীন বন্দি-সহ অন্যান্যদের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। জেল সুপার শৌভিক সরকার বলেন, “পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।”
সম্প্রতি, মালদহ সংশোধনাগারে এক বিচারাধীন বন্দিকে মারধরের ঘটনা ঘটেছিল। অভিযোগ, ওই বন্দির কাছে তোলা চেয়েছিল বকুল। সেই টাকা না দেওয়াতেই মারধর করা হয়েছিল। আক্রান্ত ওই বন্দি আদালতে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তারপরেই বিচারক জেল সুপারের কাছে পুরো ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিলেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হইচই হয়।
মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।