শুরু হয়েছিল ডালের বড়ি দিয়ে। তারপরে ঘুগনি মুড়ি তেলেভাজা। তার সুনাম যখন বেশ ছড়িয়ে গেল, তাঁদের হেঁসেল থেকে মিলত ফ্রায়েড রাইস, চিকেন কসা। জ্যোৎস্না গোস্বামী, আমবেরা বিবিদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর রান্নায় খুশি প্রশাসনের কর্তারাও। তাই তাঁদের এ বার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রোগীদের আত্মীয়দের জন্য খাবার রান্না করারও। তাঁদের মুকুটে এই নতুন পালক নিয়ে খুশি আমবেরা বিবিরা। তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালেও আমাদের কাজ দেওয়া হচ্ছে। তাই দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেল।’’
মালদহের প্রত্যন্ত গ্রামের সাত বধূ এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীটি চালান। কারও স্বামী দিনমজুরি করেন। কারও ছেলে ভিন রাজ্যে শ্রমিক। কারও স্বামী গাড়ি চালান। দরদ দিয়ে রান্না করে তাঁরা জিতে নিয়েছেন অনেকের মন।
মালদহের গ্রাম উন্নয়ন ভবনের এক কোণে রয়েছে এই মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী পরিচালিত আনন্দধারা ক্যান্টিন। বছর দু’য়েক ধরে ক্যান্টিনটি চালাচ্ছেন ইংরেজবাজার ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র পরিবারের এই সাত গৃহবধূ আমবেরা খাতুন, ডলি বিবি, জ্যোৎস্না গোস্বামী, মমতা সিংহ, রাজেশ্বরী মন্ডলেরা। অনেকেরই মত, তাঁদের রান্নায় ঘরের স্বাদই মেলে। সাধারণ মানুষ, সরকারি আমলা, আধিকারিকেরা টিফিন নিয়ে আসা বন্ধ করে দৈনিক দুপুরে ভিড় জমান এই ক্যান্টিনে। সরকারি মেলাতে আনন্দধারা ক্যান্টিনের স্টলও বসানো হয়।
এ বার তাঁরা নতুন যে দায়িত্ব পেতে চলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মালদহ সফরে এসে হাসপাতালের বহির্বিভাগের পাশে একটি ভবনে সেই ক্যান্টিনটির উদ্বোধন করে গিয়েছেন। চালু হবে ১ জুন থেকে। ক্যান্টিনে মিলবে সকালে লুচি, রুটি, তরকারি ও ডাল। তার সঙ্গে দেওয়া হবে বেগুনি ও ডালের বরা। আর দুপুরে ভাত, ডাল থেকে শুরু করে মাছ, মাংসও মিলবে। এমনকী, রাতে মিলবে রুটি-তরকারিও। বাইরের হোটেল থেকে কম খরচেই খাবার মিলবে বলে জানিয়েছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। তাঁরা বলেন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে খাওয়ার তৈরি করে পরিবেশন করা হবে। প্রশাসনিক ভবনের মতোই হাসপাতালেও ক্যান্টিনটি চললে সংসারে অভাব অনেকটাই কমবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। মালদহের জেলাশাসক তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তন্ময়কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আশা করছি হাসপাতালেও সাফল্য পাবে আমাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা।’’