নেতা কই, প্রশ্ন পাহাড়ে

সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে পুলিশের উদ্বেগও বেড়েছে। সোমবার রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ দিনভর মিরিক ও লাগোয়া দার্জিলিং এলাকায় ঘুরেছেন। আইন ভাঙার চেষ্টা হলে পুলিশ যাতে রুখে দাঁড়ায়, সে জন্য অফিসার-পুলিশকর্মীদের মনোবল বাড়ানোর চেষ্টাও করেছেন। তবে মদন তামাঙ্গ হত্যা মামলায় চার্জশিটপ্রাপ্ত নেতারা কে কোথায় রয়েছেন, তা নিয়ে পুলিশও ধাঁধায়।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৭ ০২:৫৪
Share:

—ফাইল চিত্র।

মিটিং-মিছিল-অনশন সবই হচ্ছে। কিন্তু নেতাদের দেখা নেই। তাই আচমকা কেমন যেন উদাসী আবহাওয়া গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার একাধিক অফিসে। মোর্চার অধিকাংশ নেতা-কর্মীদের চোখেমুখে উদ্বেগের ছাপ। কথাবার্তাতেও একটা ‘কী হবে’ গোছের ভাবসাব। সোমবার সকাল থেকে রাত অবধি মোর্চার একাধিক নেতা-কর্মীদের কথাবার্তায় এমনই মনে হচ্ছে সাধারণ পাহাড়বাসীদের। শুধু তা-ই নয়, নেতারা আইনি বেড়াজালে পড়ে ৭-১০ দিন আড়ালে থাকলে কী হবে, তা নিয়েও দুশ্চিন্তা কম নেই মোর্চা শিবিরে।

Advertisement

সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে পুলিশের উদ্বেগও বেড়েছে। সোমবার রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ দিনভর মিরিক ও লাগোয়া দার্জিলিং এলাকায় ঘুরেছেন। আইন ভাঙার চেষ্টা হলে পুলিশ যাতে রুখে দাঁড়ায়, সে জন্য অফিসার-পুলিশকর্মীদের মনোবল বাড়ানোর চেষ্টাও করেছেন। তবে মদন তামাঙ্গ হত্যা মামলায় চার্জশিটপ্রাপ্ত নেতারা কে কোথায় রয়েছেন, তা নিয়ে পুলিশও ধাঁধায়।

যেমন, মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। তাঁকে শুক্রবার অবধি পাতলেবাসে দেখেছেন কর্মীরা। কিন্তু শনিবার থেকে তাঁর দেখা নেই। দলের একাংশ বলছে, তিনি দার্জিলিং-সিকিমের সংযোগস্থলের কোথাও রয়েছেন। আবার কেউ বলছেন, তিনি রয়েছেন কার্শিয়াঙের কাছাকাছি। রোশন গিরি রয়েছেন দিল্লিতে। কিন্তু, বিনয় তামাঙ্গেরও দেখা নেই।

Advertisement

দলের একটি সূত্র বলছে, কয়েক জন চার্জশিটপ্রাপ্ত নেতা কার্শিয়াঙের কাছে একটি চা-বাগান লাগোয়া এলাকায় রয়েছেন। সেখানে পায়ে হেঁটে পৌঁছতে হয়। তাঁদের ঘিরে আছেন জিএলপি-র বাছাই সদস্যরা। আড়ালে থাকা নেতারা দলের অত্যুৎসাহীদের বার্তা দিয়েছেন, হাইকোর্টে মদন তামাঙ্গ হত্যা মামলায় চলতি পর্বের শুনানি না হওয়া অবধি মেপে পা ফেলতে হবে। কোথাও যাতে হামলা-সংঘর্ষ না হয়, সে দিকে নজর রাখতে হবে। জিটিএ-র এক সদস্য একান্তে জানান, আন্দোলনের রাশ গুরুঙ্গের হাতেই রয়েছে। যথাসময়ে তিনি জনসমক্ষে আসবেন।

বড় নেতারা আড়াল হতেই চাপ বাড়িয়েছে পাহাড়ের আমজনতা। তাদের দাবি, দোকানপাট খুলুক। মোর্চার ইউনাইটেড টিচার্স ফোরামের পক্ষ থেকে এ দিন জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্তের কাছে গিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তাঁরা নেট চালুর দাবি জানান। জেলাশাসক বলেছেন, ‘‘নেট ব্যবহার করে যে ভাবে বিদ্বেষমূলক প্রচার চলছে তা ভয়ঙ্কর।’’ বরং তিনি ওই শিক্ষকদের পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করেন।

রবিবার থেকে পাহাড়ের খুচখাচ একটি-দুটি দোকান ঝাঁপ খোলা রাখা শুরু করেছে। সোমবার সেই সংখ্যাটা সামান্য হলেও বেড়েছে। এই চাপ যে ক্রমে বাড়বে, তা একান্তে মানছেন মোর্চার অনেকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন