উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিটে দুই ছাত্রের নিহত হওয়ার প্রতিবাদে শিলিগুড়িতে বামেদের মিছিল ঘিরে ঝামেলা হয়েছিল। অগস্টের শেষ সপ্তাহে হওয়া ওই মিছিল নিয়ে পুুলিশের অভিযোগ ছিল যে কুশপুতুল পোড়ানো আটকানোয় মিছিল থেকে পুলিশের গায়ে কেরোসিন তেল ছুড়েছেন বামকর্মীরা।
সেই ঘটনায় অভিযোগ ওঠে এসএফআই নেত্রী সুকৃতি আশের বিরুদ্ধে। শহরের মেয়র, সিপিএম, ডিওয়াইএফ নেতা-সহ ৯ জনের নামে পুলিশকে খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন সুকৃতী। বুধবার হাওড়ায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে সুকৃতীকে গ্রেফতার করে শিলিগুড়ি পুলিশের একটি দল। ট্রানজিট রিমান্ডে তাঁকে শিলিগুড়ি আনা হচ্ছে। ডিসি (পূর্ব) গৌরবলাল বলেন, ‘‘ভিডিও ফুটেজে অভিযুক্তের ছবি সামনে এসেছে। তাঁকে খোঁজা হচ্ছিল।’’
আজ বৃহস্পতিবার তাকে শিলিগুড়ি আদালতে তোলার কথা। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে সিপিএম। দলের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, ‘‘অত্যন্ত অন্যায় করছে পুলিশ। এভাবে রাজনৈতিক হিংসা চরিতার্থ করে একটি ছাত্রীকে কোনওভাবেই মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো যায় না।’’ এই ঘটনার মোকাবিলায় আইনি পথে লড়া হবে বলে জানিয়েছে সিপিএম। পুলিশের উপর তেল ছড়ানোর মামলায় জীবেশ সরকার ও অশোক ভট্টাচার্যের নামও জড়িয়ে রয়েছে। যদিও তাঁদের এখনও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানোয় পুলিশ বাধা না দিলে এরকম ঘটনা ঘটত না বলেই দাবি করেছে বামেরা। তার প্রতিবাদে দিন চারেক আগেই শহরে বড় মিছিল করেছিল বামেরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ২৪ অগস্ট শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে অনিল বিশ্বাস ভবনের কাছেই মিছিলে কুশপুতুল নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছিল। পুলিশের যুক্তি ছিল কুশপুতুল পোড়ালে মুখ্যমন্ত্রীর অবমাননা হবে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশপুতুল পোড়ানো যাবে না। তা নিয়ে যখন টানাটানি শুরু হয়। অভিযোগ তখনই তেলের ড্রাম নিয়ে তেল ছুঁড়েছিল সুকৃতী। শিলিগুড়ি থানার আইসি দেবাশিস বসু, খালপাড়ার ওসি সুবল ঘোষ সহ ৪ জন অফিসারের শরীরে তেল পড়ে। পরে পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির ওসির দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু হয়। ঘটনার পর থেকেই বাড়িতে ছিলেন না সুকৃতী। যদিও সুকান্তপল্লির মাইকেল মধুসূদন দত্ত রোডের বাসিন্দা সুকৃতীর মা স্বাতীদেবী দাবি করেছেন, ‘‘ছবি আঁকা সহ নানা সামাজিক কাজে যুক্ত সুকৃতী। কুশপুতুলের দিকেই তেল ছুঁড়েছিল। পুলিশকে জ্বালাতে নয়।’’