হোটেলে চলল গুলি, হত দুই

এই ঘটনার পিছনে ডলোমাইটের লরি থেকে তোলা আদায়ের ভাগ বাঁটোয়ারা থাকতে পারে বলে এর মধ্যেই অনেকে অভিযোগ করেছেন। বিরোধীরা তদন্তের দাবি তুলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বীরপাড়া শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:০০
Share:

পড়ে রয়েছে নিরঞ্জনের দেহ।

কোচবিহারের দিনহাটার পরে আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট। অভিযোগ, দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমালে প্রকাশ্যেই গুলি চলল। হোটেলের মধ্যে সেই সংঘর্ষে প্রাণ হারান দু’জন, জেঠা রাই (২৬) ও নিরঞ্জন ছেত্রী (২৭)। এই ঘটনার পিছনে ডলোমাইটের লরি থেকে তোলা আদায়ের ভাগ বাঁটোয়ারা থাকতে পারে বলে এর মধ্যেই অনেকে অভিযোগ করেছেন। বিরোধীরা তদন্তের দাবি তুলেছে।

Advertisement

ঘটনাস্থল বীরপাড়া থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে মাদারিহাটের পাগলি এলাকা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত থেকে হোটেলটিতে জন্মদিনের পার্টি হচ্ছিল। তোলার ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে যে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব, তাদের লোকজন পার্টিতে হাজির ছিল বলে দাবি স্থানীয়দের। আরও অভিযোগ, রাতভর সেখানে মদ্যপান চলে৷ কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে ওই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়৷ চলে গুলি৷ প্রাণ হারান জেঠা এবং নিরঞ্জন৷

অভিযোগ, বীরপাড়া-লঙ্কাপাড়া রাজ্য সড়কের উপর দিয়ে মাল সরবরাহ ও ভুটান থেকে দলগাঁও স্টেশনে ডলোমাইট নিয়ে আসা লরি থেকে তোলা আদায় নিয়ে দুষ্কৃতীদের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে অনেক দিন ধরেই গোলমাল চলছিল। এই ঘটনার সঙ্গে এর মধ্যেই জড়িয়ে গিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের নাম। বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার অভিযোগ, “দুষ্কৃতীদের দু’টি গোষ্ঠী তৃণমূলের স্থানীয় দু’টি গোষ্ঠীর হাতে পরিচালিত হয়৷” মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘‘শাসকদলের মদতে চা বাগানগুলিতে এখন ঘরে ঘরে অস্ত্র ঢুকে গিয়েছে। যার পরিণতিতে এ ধরনের ঘটনা রোজ ঘটছে।’’

Advertisement

যে দু’জন মারা গিয়েছেন, তাঁরা বীরপাড়ার তৃণমূল নেতা পদম লামার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। পদম বলেন, ‘‘যে দু’জন মারা গিয়েছেন, তাঁরা আমার পরিচিত এবং দু’জনেই নিরীহ সাধারণ মানুষ।’’ দলে দ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দলে কোনও গোষ্ঠী কোন্দল নেই। সমাজবিরোধীরাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও যোগ নেই৷ বিজেপি মিথ্যা প্রচার করছে৷” জেঠা রাইয়ের স্ত্রী বসুন রাই বলেন, ‘‘আমার স্বামী ও তাঁর বন্ধু হোটেলে বসে প্রাতরাশ সারছিলেন। সেই সময় তাঁদের উপর বন্দুক ও ধারলো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী৷’’

পুলিশ জানিয়েছে, একজনের দেহ হোটেলে মধ্যে ও অন্য জনের দেহ হোটেলের বাইরে একটি সুপুরি বাগানের কাছে পাওয়া গিয়েছে৷ জয়গাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গণেশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, “দেহ দু’টিতে আঘাতের একাধিক চিহ্ন রয়েছে৷ ময়নাতদন্তের পর বোঝা যাবে গুলিতে মৃত্যু কিনা৷”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন