গুলি করে ছিনতাই ডালখোলায়

গুলি করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল ডালখোলায়। এ বার হামলার শিকার এক পাইকারি সব্জি ব্যবসায়ী। বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি থানার ডালখোলা এলাকাতে ঘটনাটি ঘটেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৬ ০২:৩৯
Share:

গুলি করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল ডালখোলায়। এ বার হামলার শিকার এক পাইকারি সব্জি ব্যবসায়ী। বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি থানার ডালখোলা এলাকাতে ঘটনাটি ঘটেছে। এদিন রাতে ডালখোলা বাজার এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা তুলে বাস ধরার জন্যই ডালখোলা বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন ওই ব্যবসায়ী মহম্মদ জালালউদ্দিন। তাঁর এক সঙ্গীও ছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে জানতে পারা গিয়েছে। ডালখোলার রেলগেট সংলগ্ন এলাকাতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দু’টি বাইকে থাকা চার জন দুষ্কৃতী পথ আটকায়। তাঁর কাছে থাকা টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। বাধা দিতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলিও দুষ্কৃতীরা ছোড়ে বলে অভিযোগ। তিনটি গুলি লেগে নেতিয়ে পড়ে মহম্মদ জালালউদ্দিন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

শুক্রবার ডালখোলা ফাঁড়িতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান ডালখোলা পুরসভার সিপিএমের প্রাক্তন চেয়ারম্যান হিমাদ্রি মুখোপাধ্যায় সহ এলাকার ব্যবসায়ীরা। তবে ওই ব্যবসায়ী কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বিহারের দুষ্কৃতীরা ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অমিত কুমার ভরত রাঠৌর বলেন, ‘‘ওই দুষ্কৃতীরা বিহারের বাসিন্দা। তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করা হবে।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই ব্যবসায়ী এলাকাতে সব্জি সরবরাহের কাজ করতেন। প্রায় দিনই সব্জি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েই ফিরে যেতেন। এদিন প্রায় তিন লক্ষ তিরিশ হাজার টাকা ছিল তাঁর কাছে। ডালখোলার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডালখোলায় ওই ঘটনা নতুন নয়। গত ১৫ নভেম্বর ডালখোলার সূর্যাপুর এলাকাতে এক পাম্প থেকে প্রায় আঠাশ লক্ষ টাকা গাড়ি করে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে জমা দিতে যাচ্ছিলেন পাম্পের কর্মীরা। গাড়িটি যানজটে রেলগেট সংলগ্ন একটি সেতুর কাছে দাড়িয়ে পড়লে পাম্পের নিরাপত্তারক্ষীকে গুলি করে খুন করে সেই টাকা ছিনতাই করে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তবে তারপরও এলাকাতে নজরদারি না বাড়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বাসিন্দাদের। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিহার-বাংলা সীমানা এলাকার ডালখোলা শহরে সেখানে নেই কোন থানা। একটি ফাঁড়ির উপরই নির্ভরশীল থাকতে হয় বাসিন্দাদের। এলাকাতে থানার কথা থাকলেও কোথায় সে সব, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ী প্রত্যেকেই।

Advertisement

প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শাসকও। তৃণমূলের ডালখোলার টাউন সভাপতি তনয় দে বলেন, ‘‘পুলিশের কোনও নজরদারি নেই। এলাকার মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত। এর আগেও ডালখোলা শহরেই গুলি করে টাকা ছিনতাই এর ঘটনা ঘটেছে।’’ ডালখোলার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রাজেশ গুপ্ত বলেন, ‘‘এলাকাতে থানা না হলে ওই অপরাধ কোন মতেই প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। প্রশাসনের উচিত বিষয়টিতে নজর দেওয়া।’’

তবে ডালখোলা পুরসভার চেয়ারম্যান সুভাষ গোস্বামী অবশ্য ব্যবসায়ীদের অবহেলার কথাই তুলে ধরেছেন। তাঁর দাবি, ডালখোলায় এলাকাতে ব্যবসায়ী থেকে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ প্রত্যেককেই ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর বিষয়ে সহযোগিতার আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কেউ সহযোগিতা করেননি। সুভাষবাবু বলেন, ‘‘পূর্ণিয়া মোড় থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত প্রায় ২০টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর প্রয়োজন রয়েছে। তার জন্য প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা খরচ হবে। পুরসভা কিছু টাকা বহন করার কথাও বলেছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি। এলাকাতে ওই ক্যামেরা থাকলে অপরাধ অনেকটাই কম হত। তবে থানা তৈরির প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘‘৩৫ বছর বামফ্রন্ট থেকেও এলাকাতে কোনও থানা করতে পারেনি। থানার বিষয়ে প্রক্রিয়া অনেকটাই এগিয়ে ফেলেছি। দিদি সরকারে বসলে আগামী জুলাই এর মধ্যেই থানার কাজ করতে পারব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন