জলপাইগুড়ির হোমকে ঘিরে শিশু পাচারের কাণ্ডের অভিযোগ সামনে আসার পর অবশেষে নড়েচড়ে বসল শিলিগুড়ির পুলিশ-প্রশাসন। বৃহস্পতিবার থেকে পুলিশ কমিশনারেট এলাকার হোমগুলির পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, দার্জিলিং জেলায় সরকারি কোনও হোম নেই। একাধিক বেসরকারি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত হোম রয়েছে। সেগুলিতে অনাথ শিশুদের পাশাপাশি রাখা হয় বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার হওয়া তরুণীদেরও। এ ছাড়াও প্রবীণদের জন্য রয়েছে বৃদ্ধাশ্রম। এ রকম নথিভুক্ত হোমের সংখ্যা ৯টি। শিলিগুড়িতে এর বাইরে একাধিক হোম চলছে বলে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে খবর। কিন্তু এদের সম্পর্কে কোনও তথ্য সরকারি খাতায় নেই। তাই নথিভুক্ত হোম ছাড়াও প্রতিটি থানা এলাকায় সমস্ত হোমের পরিস্থিতি, নথিপত্র খতিয়ে দেখা শুরু হল।
বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ-প্রশাসনের যৌথ পরিদর্শনের পরেই সন্ধ্যায় মহকুমা আইনি পরিষেবা সমিতির তরফে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অজয় কুমার দাস বৃদ্ধাশ্রম নিয়ে একটি রায় দেন। সেখানে বিচারকের সামনে হোমের প্রতিনিধিরা প্রয়োজনীয় নথিপত্র দেখাতে না পারায় তিনি শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক পানিক্কর হরিশঙ্করকে বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মেনে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তেমনিই, আমরা পুলিশের সঙ্গে শহরের হোমগুলির অবস্থাও খতিয়ে দেখছি।’’
এ দিন সকালে ডিসি (ডিডি) সুনীল যাদব এবং মহকুমা শাসক নিজেই দেবীডাঙা-চম্পাসারি এলাকার একটি হোমে যান। সেই সময়ই মাটিগাড়ার বিশ্ববিদ্যালয় লাগোয়া একটি হোমে যান আরেক দল প্রতিনিধি। এনজেপি, ভক্তিনগর এলাকাতেও পরিদর্শন চলে। পুলিশ সূত্রের খবর, এই সমস্ত হোম কোথায় নথিভুক্ত হয়েছে, কাদের সেখানে রাখা হচ্ছে, এ সম্পর্কে কী নথি রয়েছে তা খতিয়ে দেখে ও এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট তৈরি করা হবে। পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘একটি তালিকা তৈরি হবে। তার পরে গাফিলতি বা খামতি দেখে ব্যবস্থা হবে।’’
এ দিন বিকেলে মালদহের বাসিন্দা এক বৃদ্ধাকে এনজেপি স্টেশন থেকে উদ্ধার করার পর তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার আবেদনের মামলাটি পরিষেবা সমিতিতে শুনানি হয়। সম্প্রতি ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে মাটিগাড়ার একটি হোমে রাখা হয়েছিল। এ দিন বৃদ্ধাকে তাঁর মেয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার আগে হোমের নথিপত্র পরীক্ষা করতে গিয়ে একাধিক গাফিলতি বিচারকের সামনে এসেছে।