শতবর্ষে শিলিগুড়ি বয়েজ, এক কমিটিতে গৌতম-অশোক

বর্তমান রাজ্য রাজনীতি তাঁরা একে অপরের থেকে অনেকটাই ‘দূরে’ থাকেন। ভোটের পর সরকারিভাবে দেখা হয়েছিল, একবারই শাখা সচিবালয় উত্তরকন্যায়। প্রায় দিনই বিভিন্ন বিষয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে বিষাদগার করতেও ছাড়েন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:২৩
Share:

আমন্ত্রণপত্রে পাশাপাশি মন্ত্রী ও মেয়রের নাম। —নিজস্ব চিত্র।

বর্তমান রাজ্য রাজনীতি তাঁরা একে অপরের থেকে অনেকটাই ‘দূরে’ থাকেন। ভোটের পর সরকারিভাবে দেখা হয়েছিল, একবারই শাখা সচিবালয় উত্তরকন্যায়। প্রায় দিনই বিভিন্ন বিষয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে বিষাদগার করতেও ছাড়েন না। সেই রাজ্যের তৃণমূল সরকারের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং শিলিগুড়ির সিপিএম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যকে একযোগে নিয়ে কমিটি গড়ে শতবর্ষ উদযাপনের ঘোষণা করে দিল শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুল। এ ক্ষেত্রে অবশ্য মন্ত্রী, বিধায়কের পরিচয় এক — দু’জনেই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। আগামী ২ জানুয়ারি, সোমবার শহরের অন্যতম এই স্কুল ১০০ বছরে পা দিতে চলেছে।

Advertisement

অনুষ্ঠানের জন্য যে কমিটি স্কুল কর্তৃপক্ষ, প্রাক্তন ছাত্ররা মিলে গড়েছেন তার সভাপতি করা হয়েছে গৌতমবাবুকে, তেমনই প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে থাকছেন অশোকবাবু। এ দিন থেকেই দু’জনের নাম ছাপানো আমন্ত্রণপত্রও শহরে বিলি করা শুরু করা হয়। শুক্রবার কমিটির কর্তারা জানান, ২ জানুয়ারির প্রতিষ্ঠা দিবসের দিনই স্কুল ও শতবর্যের পতাকা উত্তোলন করবেন মন্ত্রী গৌতমবাবু। তার পরেই প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করে দেবেন বিধায়ক তথা মেয়র অশোকবাবু। কমিটির কার্যকরী সভাপতি বিকাশ রঞ্জন বসাক বলেন, ‘‘আমরা সবাই স্কুলের ছাত্র। রাজনীতি বলে কিছু নেই। সবাই মিলেই স্কুলের শতবর্ষ পালন করব।’’

স্কুলের শতবর্ষ নিয়ে অত্যন্ত উল্লসিত গৌতমবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমি এই স্কুলের ছাত্র ছিলাম। এ বার নানা ধরনের অনুষ্ঠান করা হবে ঠিকই। তবে শিলিগুড়ির বাইরে থাকায় কারা কারা কমিটিতে থাকছেন তা নিয়ে বলতে পারব না। শিলিগুড়ি ফিরে সব দেখব।’’ রাজনীতির আগে এই স্কুলের সঙ্গে তাঁর আবেগ জড়িত বলে জানিয়ে দিয়েছেন অশোকবাবুও। তিনি বলেন, ‘‘এই স্কুলে পড়াশুনো ছাড়াও একসময় খেলাধূলা, অনুষ্ঠান, সরস্বতীপুজো, কী করিনি। ১০০ বছর হল ভেবেই আনন্দ হয়। সবাই মিলে অনুষ্ঠান হবে। এখানে রাজনীতি নেই।’’

Advertisement

২ জানুয়ারির পর আগামী ২৭ জানুয়ারি বর্তমান-প্রাক্তন ছাত্র, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী-সব বিভিন্ন স্তরের মানুষকে নিয়ে শহরে শোভাযাত্রাও বার হবে। বিকাশবাবু জানান, সারা বছর ধরে অনুষ্ঠান চলবে। আমরা রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁদের সময় বার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আপাতত প্রতিদিন স্কুলে আলাদা অফিস তৈরি করে, প্রাক্তনীদের নাম, পরিচয়-সব যাবতীয় তথ্য নথিভূক্ত করার কাজ চলছে। সবার সঙ্গে ই-মেল, এসএমএসে যোগাযোগও চলছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রচার চলছে।

কমিটির অন্যতম সম্পাদক জ্যোর্তিময় ভট্টাচার্য, দীপক শীলেরা জানান, ১৯১৮ সালে শুরু হওয়া শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন বহু ব্যক্তিত্ব। প্রথিতযশা সাহিত্যিক, চিকিৎসক, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ীরা স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। তেমনই, জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য, অর্জুন প্রাপকেরাও এখানে পড়াশুনো করেছেন। স্কুলের সঙ্গে শহরের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। আমরা চাইছি, স্কুলের একটি অংশে নতুন ভবন সকলে মিলে তৈরি করে দিতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement