ইন্টারনেট ঘাঁটা হয়ে গিয়েছে। কোথাও মিলছে না ইঁদুর রোখার দাওয়াই। কোন ওষুধে ইঁদুরের হানাদারি আটকানো যায়, তা জানতে ফাইলও তৈরি হয়েছে পুরসভায়। শুক্রবার শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিঙে এমনই জানানো হয়েছে। পুরসভায় বাম ও তৃণমূল কাউন্সিলরাও বেশ কিছু ক্ষণ আলোচনা করে ইঁদুরের দল ভয় পাবে, এমন কোনও উপায় বের করতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালার খোঁজ মেলেনি।
ইঁদুর ঠেকানো কোন দফতররে কাজ তা নিয়েও প্রথমে ধন্ধ তৈরি হয়েছিল। নিয়ম মতো বোর্ড মিটিঙে কোনও প্রশ্ন করার থাকলে কাউন্সিলরদের তা লিখিত ভাবে আগে জমা দিতে হয়। ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপন দত্ত ইঁদুরের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ করে পুরসভা কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তা জানতে চেয়েছিলেন। কোনও দফতরের মেয়র পরিষদের সদস্য প্রশ্নের জবাব দেবেন তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা। জঞ্জাল-পরিবেশ-নিকাশি কোন দফতর ইঁদুর দেখবে, তা নিয়ে শুরু হয় চুলচেরা বিশ্লেষণ। শেষে তৃণমূল কাউন্সিলরের প্রশ্নেই উত্তর খুঁজে পান পুরকর্তারা। তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপনবাবুর অভিযোগ ছিল, তাঁর ওয়ার্ডে ইঁদুরের দৌরাত্ম্যে নর্দমার পাশের গার্ডওয়াল ধসে যাচ্ছে। রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে। নর্দমার গার্ডওয়াল, রাস্তা এগুলি তৈরি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পূর্ত বিভাগের। তাই ইঁদুর সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেওয়ার দায়িত্ব পড়ে সেই বিভাগের মেয়র পরিষদের সদস্যের ওপরেই।
পূর্ত বিভাগের মেয়র পরিষদের সদস্য নুরুল ইসলাম ইঁদুর সমস্যায় টেনে আনেন আমেরিকার কথা। সুদুর শিকাগো শহরেও ইঁদুরের দৌরাত্মে কালর্ভাট নষ্ট হচ্ছে বলে ইন্টারনেটে জানতে পেরেছেন নুরুলবাবু। মেলেনি শুধু সমস্যার সমাধান। নুরুলবাবু বলেন, ‘‘ইঁদুর সংক্রান্ত প্রশ্ন দেখেই অনেক উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। ইন্টারনেটেও খোঁজ করেছি। কিন্তু কিছুই পাওয়া যায়নি। কিন্তু ইঁদুরের দৌরাত্ম সত্যি সমস্যা।’’ প্রশ্নকর্তা স্বপনবাবুকে আশ্বস্ত করে মেয়র পরিষদের সদস্য জানান বিশেষজ্ঞ মতামত নিতে একটি প্রস্তাব তৈরি হয়েছে। নুরুলবাবুর আশ্বাস ‘‘ইঁদুর আটকাতে কোনও বিজ্ঞান আছে কিনা তা জানার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে ফাইল চালাচালি হচ্ছে।’’
ইঁদুর আলোচনা আরও কিছুক্ষণ গড়িয়েছে। তৃণমূলের কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল অভিজ্ঞতা থেকে একচি ওষুধের নাম প্রস্তাব করেন। মেয়র অশোক ভট্টাচার্য সে নাম শুনে দাবি করেন সে ওষুধ বর্তমানে নিষিদ্ধ। নর্দমায় ফেলা খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশের কারণে ইঁদুরের বংশবৃদ্ধি হচ্ছে বলে আলোচনা হয়। কাঁচের গুড়ো মাখানো ওষুধ প্রয়োগে ইঁদুর বাহিনীকে আটকানো সম্ভব বলেও প্রস্তাব ওঠে। যদিও কী পদক্ষেপ হবে তা এখনও স্থির হয়নি। কোন উপায় এই প্রাণীকে জব্দ করা সম্ভব পুরকর্তারা আপাতত সেই খোঁজ চালাচ্ছে।