প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ দূর করবেন বাসিন্দারাই

শিলিগুড়ি: চিঠিপত্রশিলিগুড়ি: চিঠিপত্র

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৫ ০২:০৩
Share:

কেউ জবরদস্তি প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ গছিয়ে দিলেও ব্যবসায়ীদের একাংশ কাগজের ঠোঙা, কাপড়ের ব্যাগের দিকেই ঝুঁকছেন। —নিজস্ব চিত্র।

প্রতিবাদ নতুনদের মুখে

Advertisement

এ শহরে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বর্জনের ব্যাপারে নাগরিকদের মতামত নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। কর্মসূত্রে শিলিগুড়ি-সহ গোটা পাহাড়ে ঘোরাফেরার সুবাদে তা নিয়ে নানা মহলে আলোচনাও শুনতে পাচ্ছি। শিলিগুড়ির সাধারণ মানুষও এখন প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বর্জনের ব্যাপারে সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছেন দেখছি। কিন্তু, সমস্যাটা অন্যত্র হচ্ছে। অন্তত, আমার তাই মনে হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের একাংশ জোর করে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ দিচ্ছেন। বিশেষত, বিধান মার্কেটের মাছ বাজারে। পাশের মুর্গিহাটায় কিন্তু অনেকই ব্যবসায়ী কাপড়ের ব্যাগেই দিচ্ছেন। আবার ফল বিক্রেতাদের একাংশ ঠোঙা, কাপড়ের ব্যাগ দিলেও অন্য অংশ ‘কিছু হবে না’ বলে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ গছিয়ে দিতে চাইছেন। তবে আপত্তি করলে কিন্তু প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ রেখে কাপড়ের ব্যাগ কিংবা ঠোঙা দিচ্ছেন। কয়েকদিন আগেই দেখেছি, এক দম্পতি বিধান মার্কেটে ফল কিনতে গিয়েছেন। সেখানে এক বিক্রেতা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগে সামগ্রী দিচ্ছিলেন। কিন্তু, ওই দম্পতির সঙ্গে থাকা দুই স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়ে আপত্তি জানাল। এমনকী, ওই ফল বিক্রেতা শহরের পরিবেশ বাঁচাতে চান না নষ্ট করতে চান সেই প্রশ্নও তুলে দিল তারা। বেগতিক দেখে ফল বিক্রেতা কাপড়ের ব্যাগে সামগ্রী দিলেন। নতুন প্রজন্মের এ ভাবে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বর্জনের ব্যাপারে রুখে দাঁড়ানোর দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। সে জন্য তা তুলে ধরলাম। আশা করি, আগামী দিনে শহরের সব স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বর্জনের অভিযানে সামিল হয়ে এই শহরকে ‘দৃষ্টান্ত’ হিসেবে তুলে ধরবে।

সোনালি মিত্র, শিলিগুড়ি

Advertisement

বন্ধ হওয়ার উপক্রম

ব্যবসার সূত্রে নিয়মিত শিলিগুড়ি যাতায়াত করি। বছর দশেক আগে দেখতাম শিলিগুড়িতে দেদার প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ চলত। আমরাও প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগে জিনিসপত্র লেনদেন করতাম। কিন্তু, মাটিগাড়ার বেশ কয়েকটি এলাকায় অল্পস্বল্প যে চাষাবাদ হতো তা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় ধানের চারাও বাড়ছে না। লাঙল দিতে গেলেই উঠে আসছে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ। তা হলে ধানের মতো স্বল্পজীবী গাছের দুর্বল শিকড় পথ খুঁজে পাবে কী ভাবে? আমাদের পরিচিত অনেকে কৃষক বন্ধুই প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের বিপদের কথা বুঝে তা ধীরে ধীরে বন্ধের পথে পা বাড়াচ্ছেন। যেহেতু মাটিগাড়া একেবারে শিলিগুড়ির গা ঘেঁষে, তাই শহরে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বাড়লে আমাদেরও বিপদ বেড়ে যাবে। তাই আমরাও শিলিগুড়িতে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ পুরোপুরি বন্ধ হোক তা চাই। আমরাও ধীরে ধীরে শিলিগুড়ি থেকে অনেকে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ কেনা বন্ধ করে দিয়েছি। তবে রাতারাতি তো বন্ধ হবে না। কিন্তু, ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশই চাইছেন প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধ হোক। তাই আজ হোক কিংবা কাল, শিলিগুড়িতে যে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ হবে সেই ব্যাপারে আমাদের অনেকেরই সন্দেহ নেই। গ্যাংটক পারলে শিলিগুড়িও পারবে।

অর্ধেন্দু রায়, মাটিগাড়া

সচেতনতা বাড়াতে হবে

প্লাস্টিক নিয়ে লাগাতার প্রচার হলেও পুরোপুরি সচেতনতা এখনও জাগ্রত হয়নি। কোনও সময় খদ্দের জোর করছেন, প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ দেওয়ার জন্য। কখনও বিক্রেতারা জিনিস নিতে হলে প্লাস্টিকের ব্যাগে নেওয়ার জন্য জোর করছেন। অন্যথায় তারা কোনও ব্যাগ দিতে পারবেন না বলে জানাচ্ছেন। বাধ্য হয়ে অনেকে নিচ্ছেন। তবে এখন অনেকে প্রতিবাদ করেন। শহরের বিধান মার্কেট, সুভাষপল্লি বাজার, রথখোলা বাজার, গেটবাজার, তিনবাত্তি বাজার, জলপাইমোড় বাজার, ঝংকার মোড় বাজার, চম্পাসারি বাজারের ব্যবসায়ীদের একাংশ ব্যবহার করছেন প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ। দেখলে দুঃখ হয়। কারণ, আমাদের শহর রাজ্যের মধ্যে এক সময় প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ মুক্ত শহর হিসেবে গর্বিত করেছিল আমাদের। পুরস্কারও পেয়েছিল এই উদ্যোগের জন্য। রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে রেখে একসঙ্গে কাজ করলে সেই সম্মান ধরে রাখাটা মোটেও কঠিন নয়।

চয়নিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন