কলেজে নেই পরীক্ষাগার

প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস পাঁচ মাইল দূরে

পলিটেকনিক কলেজ। অথচ ইলেকট্রিক্যাল এবং টেলি কমিউনিকেশন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যবহারের জন্য কোনও পরীক্ষাগার নেই। ফলে সুবিধামত যন্ত্র ব্যবহার তো দূর অস্ত, শুধু যন্ত্র চিনতেই তাঁদের যেতে হয় পাঁচ কিলোমিটারের বেশি দূরে। দুই মাইল এলাকায় শাস্ত্রীনগরের আইটিআই কলেজে। তাই পড়াশোনা করতে এসে এখন রীতিমত সমস্যায় ডাবগ্রামের শিলিগুড়ি পলিটেকনিক কলেজের সংশ্লিষ্ট বিভাগের পড়ুয়ারা।

Advertisement

সংগ্রাম সিংহ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৫ ০২:২৪
Share:

পলিটেকনিক কলেজ। অথচ ইলেকট্রিক্যাল এবং টেলি কমিউনিকেশন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যবহারের জন্য কোনও পরীক্ষাগার নেই। ফলে সুবিধামত যন্ত্র ব্যবহার তো দূর অস্ত, শুধু যন্ত্র চিনতেই তাঁদের যেতে হয় পাঁচ কিলোমিটারের বেশি দূরে। দুই মাইল এলাকায় শাস্ত্রীনগরের আইটিআই কলেজে। তাই পড়াশোনা করতে এসে এখন রীতিমত সমস্যায় ডাবগ্রামের শিলিগুড়ি পলিটেকনিক কলেজের সংশ্লিষ্ট বিভাগের পড়ুয়ারা। বহুবার আবেদনের পরেও এখনও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়নি বলে কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে চালু হয়েছে এই কলেজের ইলেকট্রনিক ও টেলি কমিউনিকেশন বিভাগটি। বর্তমানে রয়েছেন প্রায় ৫০ জন ছাত্রছাত্রী। পরীক্ষাগার না থাকায় রীতিমত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ওই বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্র অভিযোগ করেন, ‘‘নিজস্ব পরীক্ষাগার না থাকায় কোনও বিষয় বুঝতে চূড়ান্ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’’ প্রথম বর্ষের আরও এক ছাত্রের অভিযোগ, ‘‘অন্য কলেজে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করতে গেলে যে সমস্যাটা হচ্ছে, তা হল আগে তাদের জন্য ক্লাস ছেড়ে দিতে হয়। তারপর আমরা ক্লাস পাচ্ছি।’’ বারবার অন্য কলেজে যাওয়া ও তাঁদের অনুরোধ করে এই ক্লাস করার অসুবিধার জন্য বছরে কয়েকটির বেশি ক্লাস করার সুযোগ থেকে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ।

পরীক্ষাগারের সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন পলিটেকনিক কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ‘‘ইলেকট্রনিক অ্যাণ্ড টেলি কমিউনিকেশনের পরীক্ষাগারের সমস্যা রয়েছে। তা নিয়ে সরকারি স্তরে কথাও হয়েছে। খুব শীঘ্রই নিজস্ব পরীক্ষাগার পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।’’ তবে ক্লাস কম পেলেও কোনও সমস্যা হচ্ছে বলে মনে করেন না অধ্যক্ষ। তিনি দাবি করেন, ‘‘যে ক’টি প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস পাচ্ছেন ছাত্রেরা তা যথেষ্ট।’’

Advertisement

পরীক্ষাগার না থাকার সমস্যা নিয়ে সরব হয়েছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোও। ইতিমধ্যেই কলেজে পরীক্ষাগার চালু করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় দরবার শুরু করেছেন তাঁরা। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান না করতে পারা নিয়ে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য দুষেছেন রাজ্য সরকারের উদাসীনতাকেই। তাঁরা সরকারে থাকার সময়ে একের পর এক স্কুল কলেজ তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ‘‘আমি নিজে উদ্যোগ নিয়ে এই পলিটেকনিক কলেজটি তৈরি করিয়েছিলাম। কিন্তু তা যেমন ছিল তেমনই রয়ে গিয়েছে। নতুন সরকার কলেজ স্কুলের নামে লোকের মন ভোলাচ্ছে।’’ যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান। তিনি দাবি করেন, ‘‘এ বিষয়ে আমাকে কেউ জানায়নি। বিষয়টি ভাল করে খোঁজ নিয়ে দেখেই কিছু বলতে পারব। প্রয়োজন হলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।’’

এ দিকে পলিটেকনিক কলেজের ক্লাস আইটিআই কলেজে কি ভাবে হতে পারে তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইসা)-র দার্জিলিং সম্পাদক প্রদীপন গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘পলিটেকনিকের ‘গ্রেড’ আইটিআইয়ের চেয়ে বেশি। ফলে আইটিআই কলেজে পলিটেকনিকের ক্লাস করা নীতিবিরুদ্ধ।’’ এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এসএফআইয়ের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সৌরভ দাসও। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকার প্রতিদিন নতুন নতুন কলেজ খুলছে বলে দাবি করছে। কিন্তু যেগুলো ইতিমধ্যেই রয়েছে, সেগুলোর মানোন্নয়ন বা ঘাটতি পূরণ নিয়ে কোনও হেলদোল নেই রাজ্য সরকারের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন