সম্ভাব্য দশম শিলিগুড়ি গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী অঞ্চিতা দাস।
কেকেআর ছিটকে যাওয়ায় মন খারাপ। তাই আইপিএল তো বটেই কয়েকদিন চোখ রাখেননি টিভির পর্দাতেই। তবে শুক্রবার সকাল থেকেই অভিমান ভেঙে শিলিগুড়ির সুভাষপল্লির ফ্ল্যাটে, টিভির সামনে হাজির অঞ্চিতা দাস। সঙ্গে বাবা ও মা। ফল সরকারিভাবে ঘোষণা হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই টিভিতে দেখাতে শুরু করে মেধা তালিকা। কৌতুহল ছিল কারা এ বারের তালিকায় স্থান পায় তা দেখার। তবে সে নিজেই যে সেই তালিকার সদস্য হবে তা অবশ্য কল্পনাও করেনি বলে অকপটে জানায় শিলিগুড়ি গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রীটি।
তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৬৪। মেধা তালিকায় স্থান হিসেবে দশম হলেও রাজ্যের প্রথম স্থানাধিকারীর সঙ্গে তাঁর নম্বরের ফারাক মাত্র ১০। তাতে অবশ্য কোনও আক্ষেপ নেই পেশায় সেলসকর্মী বাবা রণেন্দ্রবাবু বা মা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকা অপর্ণাদেবীর। বললেন, ‘‘নিয়মিত পড়ানোর সুবাদে তাই আশাই ছিল মেয়ে ভাল ফল করবে। তবে মেধা তালিকায় স্থান করে আমাদের চমকে দিয়েছে।’’ চমকে গিয়েছেন স্বীকার করেছেন অঞ্চিতা নিজেও। মেয়ের বিজ্ঞান বিভাগের পড়াশোনা দেখতেন অপর্ণাদেবী নিজেই। নিজে পদার্থবিদ্যায় সাম্মানিক স্নাতক। তাই বিজ্ঞান বিভাগে কোনও গৃহশিক্ষক দেননি। কলা বিভাগে শিক্ষক নিয়েছিলেন।
শিলিগুড়িতে প্রথম তো বটেই রাজ্যে দশম স্থান অধিকার করলেও সারাদিন পড়ায় তার বিশ্বাস নেই অর্চিতার। ভালবাসে গল্পের বই পড়তে, ক্রিকেট দেখতে। তালিম নিয়েছে ধ্রুপদী সঙ্গীতেও। জানালেন হিন্দি সিনেমা দেখতে ভালবাসে সে। তবে শেষ সিনেমা দেখেছে বেশ কয়েকমাস আগে শাহরুখ-দীপিকা অভিনীত হ্যাপি নিউ ইয়ার। পড়ার পাশাপাশি সময় কর কী করে? অঞ্চিতার উত্তর, ‘‘যখন মনে হবে পড়তে হবে। সব সময় বই নিয়ে বসতে হবে, তার কোনও মানে নেই। পড়াটা উপভোগ করতে হবে।’’ নিজে চান আপাতত বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে মেডিক্যাল জয়েন্টের জন্য প্রস্তুত হতে।
সকাল থেকেই অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসলেন তিনি। খবর পেয়ে বাড়িতে আসেন এলাকার কাউন্সিলর মৌসুমী হাজরা থেকে পাড়া-পড়শিরা। অঞ্চিতাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। সকলেরই বার্তা, আরও ভালো করতে হবে আগামী দিনে।
শুক্রবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।