সংগঠক: কোচবিহারের রাসমেলার মাঠে জনসভায় সিপিএমের সাধারণ সর্বভারতীয় সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
হিংসার রাজনীতি রুখতে লাল ঝান্ডার উপরেই ভরসা রাখতে বললেন সিপিএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। শনিবার কোচবিহারে রাসমেলার মাঠে জনসভায় বক্তব্য রাখেন তিনি। সেখানে তিনি কোচবিহারের আবেগকে উসকে দিয়ে দলীয় কর্মী থেকে সাধারণ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দেন। তিনি বলেন, “কোচবিহারে ইতিহাস রয়েছে। এখানে রাজবংশী, আদিবাসী মানুষজনও বসবাস করেন। একে অপরকে সম্মান করেন। কিছু শক্তি এই ঐক্য ভাঙতে চায়। দেশকে ভাঙতে চায়। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।”
তিনি অভিযোগ করেন, তৃণমূল ও বিজেপি একে অপরকে ব্যবহার করে রাজনীতি করছে। তৃণমূল সংখ্যালঘুদের প্রতি সহানুভূতি দেখাচ্ছে। যদিও সেটা দেখানো। তা দেখিয়ে বিজেপি সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়কে উসকে দিচ্ছে। রামনবমীর দিন স্কুলের ছোট ছোট ছাত্রছাত্রীর হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে তাঁরা। দেশ জুড়ে কর্মহীনের সংখ্যা বাড়ছে বলে অভিযোগ করেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধেও সরব হন। মহিলা সংরক্ষণ বিল কেন পাশ করানো হচ্ছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ইয়েচুরি।
এ দিনের সভায় ছিলেন সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য সূজন চক্রবর্তী। তিনি দুর্নীতি নিয়ে সরব হওয়ার পাশাপাশি আগামী ২৪ এপ্রিল কোচবিহারে মুখ্যমন্ত্রীর সভা নিয়ে সরব হন। ২৫ এপ্রিল রাসমেলার মাঠে কেপিপির সভায় মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিত থাকার কথা। সেই প্রসঙ্গে সুজনবাবু বলেন, “দলের উপরে মুখ্যমন্ত্রীর ভরসা নেই। তাঁর নাম শুনলে এখন আর লোক হয় না। তাই অন্য সংগঠনের উপরে ভরসা করতে হচ্ছে। অসম সহ নানা জায়গা থেকে লোক আনার চেষ্টা হচ্ছে। তাতে এগোবে না।” পাশাপাশি তিনি শাসক দলকে সতর্ক করে দিয়ে জানান, গ্রামে গ্রামে ঘুরে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি নেই এমন ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করছে সিপিএম। তাতে কোচবিহারের কয়েকজনের নাম রয়েছে। কেউ ছাড় পাবে না।
তৃণমূল ও বিজেপি অবশ্য সিপিএমের ওই বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন,‘‘সিপিএম ও বিজেপিই রাজ্যে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। লাভ নেই। মানুষ সব বোঝে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দের বক্তব্য,‘‘ সিপিএম এখন অপ্রাসঙ্গিক। মানুষ ওদের গুরুত্ব দেয় না। ওদের বলায় কিছু এসে যায় না।’’